হোম অর্থ ও বাণিজ্য ইসরাইল-হামাস সংঘাত: বিশ্ববাজারে ৯০ ডলার ছাড়ালো জ্বালানি তেলের দাম

বাণিজ্য ডেস্ক:

চলমান ইসরাইল-হামাস সংঘাত নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিক্রিয়ার প্রভাবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯০ মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৯০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। এরপরে সোমবারও (১৬ অক্টোবর) জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলারের ওপরেই রয়ে গেছে। মূলত মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ইসরাইল-হামাস সংঘাতের প্রতিক্রিয়ার প্রভাবই পড়েছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে। অন্য দেশগুলো এই পরিস্থিতি নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে সেটি নিয়ে বিনিয়োগকারীরা বিচলিত হয়ে পড়েছেন।

ইসরাইল-হামাস সংঘাত শুরুর পর থেকেই বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে অপরিশোধিত তেলের দাম। ব্রেন্ট ক্রুড ও ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) উভয় বেঞ্চমার্কই শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) প্রায় ৬ শতাংশ বেড়েছে। এতে গত সপ্তাহে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআইয়ের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ।

এদিকে সোমবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম প্রতি ব্যারেল ৩৯ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ কমে অবস্থান করছে ৯০ দশমিক ৫০ ডলারে। এছাড়া ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ২৬ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৮৭ দশমিক ৪৩ ডলারে।

এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর তেলের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। গত বছরের জুনে এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম ১২০ ডলারের ওপরে উঠে যায়। যদিও পরে তা পর্যায়ক্রমে কমতে থাকে। ফলে চলতি বছরের মে মাসে তা কমে ব্যারেলপ্রতি ৭০ ডলারের কাছাকাছি নামে। কিন্তু ওপেক প্লাসের তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণায় আবারও উর্ধ্বমুখী হতে থাকে অপরিশোধিত জ্বালানির দাম। যার কারণে এক পর্যায়ে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেল ৯৫ ডলারের কাছাকাছি উঠে যায়।

কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়ার সংঘাতের প্রভাবের পর হামাস-ইসরাইল সংঘাত তেলের বাজারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকির শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। যদিও ইসরাইল ও ফিলিস্তিন জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী অঞ্চল নয়, তা সত্ত্বেও এই দুই দেশের মধ্যে দেখা দেয়া সংঘাত জ্বালানির বিশ্ববাজারকে প্রভাবিত করছে। কারণ বিশ্বের মোট জ্বালানি তেলের প্রায় এক তৃতীয়াংশই সরবরাহ হয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে। তাছাড়া যে কোনো সময়ে এই সংঘাতে ইরানের জড়িয়ে পড়ার উদ্বেগও বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো ‘দ্য অরগানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম কান্ট্রিস’ বা ওপেক নামে পরিচিত। আবার ওপেকের বাইরে অন্যান্য তেল উৎপাদনকারী দেশ ও ওপেকের সদস্যদের একত্রে ওপেক প্লাস নামে অভিহিত করা হয়। সেপ্টেম্বরে ওপেকের সদস্য সৌদি আরব ও রাশিয়া জানিয়েছিল, চলতি বছরের শেষ নাগাদ সম্মিলিতভাবে দৈনিক ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উত্তোলন কমানো হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন