ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে(ইবি) নির্মাণাধীন ভবনের প্রেশার পাইপ বিস্ফোরণে তিন জন নির্মাণ শ্রমিক আহত হয়েছেন। শনিবার (১৮ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের বর্ধিতাংশের নির্মাণাধীন ভবনের চতুর্থ তলার ছাদের ঢালাই চলাকালীন সময়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শ্রমিকরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী শ্রীরামপুর গ্রামের শহীদ, জাঙ্গালিয়া গ্রামের রসূল এবং জগতপুরের শান্ত। এদের মধ্যে শহীদ এবং রসূল গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের দক্ষিণ ব্লকের ছাদ ঢালাইয়ের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। এসময় ছাদ ঢালাইয়ের জন্য নিচে মেশিনে প্রস্তুত করা সিমেন্ট, বালু এবং ইটের মিশ্রণগুলো মোটা প্রেশার পাইপের মাধ্যমে নিচ থেকে ছাদে তোলা হচ্ছিলো। কাজ চলাকালীন মাঝখানে পাইপটিতে জ্যামের সৃষ্টি হয়। ফলে এক পর্যায়ে পাইপটি জয়েন্ট থেকে খুলে গিয়ে সেখানে কর্মরত তিন নির্মাণ শ্রমিক রসূল, শহীদ ও শান্তর গায়ে প্রচন্ড আঘাত লাগে। আঘাত পেয়ে তিনজনই সেখানে পড়ে যায়। পরে সেখানে কর্মরত অন্য শ্রমিকরা তাদেরকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার করেন। পরে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাহেদ হাসান বলেন, আহত অবস্থায় তিনজনকে মেডিকেলে আনা হয়। এদের মধ্যে দুইজনের আঘাত খুব গুরুতর, তাদের বুকে আঘাত লাগে। আমরা তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়ায় রেফার করে দিয়েছি।
এদিকে, ভবন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মুন্না বলেন, এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। প্রেশার পাইপ বিস্ফোরণ সাধারণত ঘটে না। তবে আমি আহত শ্রমিকদের সাথেই আছি। তাদেরকে কুষ্টিয়া হাসপাতালে ভর্তি করার পর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নিব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্ব ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। আমি গতদিনও তাদেরকে আইডি কার্ডসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানিয়েছি। আজকের ঘটনাটি জানার পর তাৎক্ষণিক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদেরকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কুষ্টিয়া পাঠিয়েছি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ২য় প্রশাসনিক ভবনের পাইলিংয়ের কাজ চলাকালীন মাথায় পিলারের আঘাতে এক জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তার আগেও একাডেমিক ভবনের ছাদ থেকে পড়ে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়।