হোম অন্যান্যসারাদেশ ইবিতে নিকাব ইস্যু, প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের

ইবিতে নিকাব ইস্যু, প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 89 ভিউজ

ইবি প্রতিনিধি:

ভাইভা বোর্ডে নিকাব না খোলায় পরীক্ষা নিতে অস্বীকৃতি জানানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় প্রশাসন ভবন চত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা- ‘পর্দার অধিকার চাই’, ‘নিকাব মুসলিম নারীর অলংকার’, ‘কে বলে নিকাশ আধুনিকতা নয়?’, ‘আমার হিজাব, আমার নিকাব, আমার অধিকার’, ‘ক্যম্পাসে ধর্ম পালনের অধিকার চাই’ ও ‘নিকাব আমার জাতিগত অধিকার’ সহ নানা স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন প্রদর্শন করেন।

এসময় আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আসিবুর রহমানের সঞ্চালনায় দা’ওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল কাইয়ুম, আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাকারিয়া ও আল হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন রাহাত বক্তব্য রাখেন। এতে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ইসলামী শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষার মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়েই নেকাব না খোলার কারণে এক ছাত্রীকে ভাইবা বোর্ডে বসতে দেওয়া হয়নি। বিষয়টি লজ্জার। যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সাথে সাংঘর্ষিক ও বাংলাদেশের সংবিধান এবং সার্বজনীন মানবাধিকার বিরোধী। আমরা শিক্ষাগুরুদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই কোন অধিকারে তাকে ভাইবায় বসতে দেওয়া হয় নি? ঐ বিভাগে সরাসরি সংবিধান লঙ্ঘন করেছে, সেই সাথে ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করেছে। আমরা এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সাথে সাথে আমরা উক্ত ঘটনার দ্রুত সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।

বক্তারা আরও বলেন, আমরা এই মানববন্ধন থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের যুগে যেন আধুনিক ডিভাইসের মাধ্যমে ব্যক্তির পরিচয় সনাক্তের দাবি জানাচ্ছি। এবং এমন উদ্ভট পরিস্থিতিতে নারী শিক্ষক দ্বারা পরিচয় সনাক্তের দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থী উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বরাবর চার দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেন।

তাদের দাবিগুলো হলো- ন্যাক্কারজনক ও হীন এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা, ক্যাম্পাসের সর্বত্র শালীন, রুচিসম্মত পোশাক পরিধানের অবধ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে স্ব স্ব ধর্মপালনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং পরবর্তীকে যেন কেউ কারো ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার মতো দুঃসাহস না করে, এটা নিশ্চিত করা।

এসময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অধিকার কারো নেই। শিক্ষককে হতে হবে বাবার মতো। তার আচরণ, স্নেহ, ভাষা সবকিছু বাবার মতো হবে। কিন্তু আমাদের এখানে কিছু ব্যাত্যয় ঘটেছে, আমাদের আচরণ পিতার মতো হচ্ছে না। আমি উপাচার্যের সাথে কথা বলবে তবে বিষয়টির সমাধান করবো।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে এক নারী শিক্ষার্থী নিকাব পড়ে ভাইভায় অংশ নেয়। এসময় ভাইভা বোর্ডের শিক্ষকরা তার পরিচয় নিশ্চিতের জন্য নিকাব খুলতে বলেন। ওই ছাত্রী তাতে অসম্মতি জানান এবং প্রয়োজনে নারী শিক্ষকদের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাকে ভাইভা বোর্ডের সব সদস্যের সামনে নিকাব খুলতে বলেন শিক্ষকরা। পরে না খোলায় তার ভাইভা নিতে অস্বীকৃতি জানান বোর্ডের সদস্যরা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন