হোম খুলনাসাতক্ষীরা আশাশুনির হাসিবাকে উদ্ধার করা ও আসামী গ্রেফতার হয়নি,দ্বারে দ্বারে ঘুরছে

আশাশুনির হাসিবাকে উদ্ধার করা ও আসামী গ্রেফতার হয়নি,দ্বারে দ্বারে ঘুরছে

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 17 ভিউজ
স্টাফ রিপোর্টার:
হাসিবা খাতুন অসহায় গরীব পিতা-মাতার দুখী কন্যা। অভাবের সংসারে বিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু শারীরিক সমস্যার কারনে তাকে ঠকিয়ে ছোট্ট একমাত্র মেয়েকে ফেলে চলে গিয়েছির স্বামী। অনেক আশা নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে দিলেও সুখ হলোনা কপালে; তাকে ভারতে পাচার করেছে দ্বিতীয় স্বামী। এমন দুঃখিনী মেয়ে হাসিবার পিতার বাড়ী আশাশুনি উপজেলার শ্রীধরপুর গ্রামে। পিতার নাম রবিউল ইসলাম গাজী, মাতা শাহানারা বেগম।
প্রথম স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ির পর বাবা মা পাত্র পক্ষের আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে, বাচ্চাকে সহ ঘরে উঠাবে প্রতিশ্রুতিতে স্ত্রী হারা মঞ্জুরুল মোল্যার সাথে দ্বিতীয় বিয়ে দিয়েছিল হাসিবাকে। মঞ্জুরুলের পিতার নাম মৃত মোহর আলী মোল্যা। গ্রাম দক্ষিণ একসরা। কিন্তু পরবর্তীতে আগের ঘরের কন্যাকে মেনে নিতে না পারায় স্বামী সংসার ছেড়ে বাপের বাড়ী আসে সে। স্বামীর কোন যোগাযোগ না পেয়ে বাধ্য হয়ে ছোট্ট মেয়ে ও মাকে নিয়ে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকুরী নেয় হাসিবা। সেখানে বেশ ভালই কাটছিল হাসিবার। খবর পেয়ে মঞ্জুরুল সেখানে গিয়ে মায়ায় ভুলিয়ে জায়গা করে নেয়। কিন্তু তার ষড়যন্ত্র থামেনি। স্ত্রীকে চাপ দিয়ে কয়েকবার টাকা আদায় করে শ্বশুর-শ্বাশুড়ির কাছ থেকে। একবার ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে। টাকা না পেয়ে ষড়যন্ত্র পাকাতে শুরু করে এবং গত ৬ জুলাই ৬০০ টাকা চায়। এরপর থেকে হাসিবার সাথে কোন যোগাযোগ হয়নি। তারা বাড়ি আসার নাম করে বের হয়ে হাসিবাকে ভারতে পাচার করে পতিতালয়ে বিক্রয় করে দিয়েছে বলে দাবী করেন হাসিবার মা-বাবা। সেই থেকে হাসিবার মোবাইল বন্ধ রয়েছে। জামাতা বাড়িতে এসেছে গোপন খবর পেয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাদীরা জামাতা মঞ্জুরুলদের বাড়িতে যেয়ে হাসিবার কথা জানতে চাইলে দুই লক্ষ টাকা যৌতুক চেয়েছি দেননি, তাই তোমার মেয়েকে জোর করে ভারতে পতিতালয়ে বিক্রী করে দিয়েছি। এরপর তাদেরকে মঞ্জুরুল, আরাফাত ও মনতাজুল মোল্যা হত্যার হুমকী, মারপিট ও চরম অপদস্ত করে তাড়িয়ে দেয়।
শাহানারা খাতুন জানান, এব্যাপারে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। বাধ্য হয়ে মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল সাতক্ষীরায় পি-৪৭৮/২৪ নং মামলা করেন। আদালতের আদেশ পেয়ে আশাশুনি থানা ২২/৯/২৪ তাং ১১ নং নিয়মিত মামলা রেকর্ড করেন। তারা বারবার থানায় যোগাযোগ করে আসছেন কিন্তু এখনো মেয়েকে উদ্ধার ও অপহরণ-পাচারকারীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। একবার তারা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চাপড়ায় মঞ্জুরুলকে পেয়ে পুলিশে খবর দিলে (৫ আগষ্টের পরের অচলাস্থার সময়) পুলিশ যেতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বাদী বলেন, আমাদের কাছে অজ্ঞাত স্থান থেকে ০১৬২১৭১২০৩৬ মোবাইল নম্বর থেকে কয়েকবার রিং করে জানায় তারা একসাথে এক বাড়িতে আটকা আছে। খবর দিয়ে ইনিবিনিয়ে কিছু টাকা দাবী করলে পুলিশে তথ্য জানান। কিন্তু সে ব্যাপারেও কোন উল্লেখযোগ্য ফলাফল তারা পাননি। ফলে চোখের পানিতে বুক ভিজিয়ে বৃদ্ধ পিতা-মাতা দারে দারে ঘুরছে। ছোট্ট মেয়েটি মায়ের কথা জানতে চেয়ে ডুকরে ডুকরে কাঁদছে।
এব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাজীব মন্ডল জানান, ঘটনাটা ঢাকার, আদালতের নির্দেশে আমরা মামলা নিয়েছি এবং কার্যক্রম শুরু করেছি। ওরা ৫ আগষ্টের পরে আসামীকে ধরে এনেছিল কিন্তু ঐসময়ে তো সে পরিবেশ ছিলনা। বাদী পক্ষ তাড়াতাড়ি করায় আসামীরা গা ঢাকা দিয়েছে। তাদের মোবাইল বন্ধ, চেষ্টা করছি কোন মোবাইল ব্যবহার করছে ও তথ্য উদঘাটনের। তাদের কাছে মাঝে একটি মোবাইল থেকে কথা বলেছিল অন্য একজন, সে মোবাইলও বন্ধ। তারপরও এসব সূত্র ধরে আমরা এগুচ্ছি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন