রাজনীতি ডেস্ক:
পুলিশ হত্যা মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আদালতে নিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) অবরোধে সহিংসতা, নাশকতা ও পুলিশ হত্যার ঘটনায় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের বিষয়ে ডিবি অফিসে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
ডিআইজি হারুন জানান, পুলিশ হত্যা ও সহিংসতায় ইন্ধনদাতারা গ্রেফতার হচ্ছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এরমধ্যে আজ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদকে আদালতে তোলা হবে। এবং পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ডিবির গুলশান জোন রাজধানীর গুলশান ২ এর ৮১ নাম্বার রোডের ৮/এইচ এর বাসা থেকে অভিযান চালিয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়।
আমীর খসরুর গ্রেফতারের খবর নিশ্চিত করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার জানান, গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে।
গোপন খবরের ভিত্তিতে আমীর খসরুকে গ্রেফতারে গুলশানের ৮১ নম্বর সড়কের ওই বাসা ঘিরে ফেলে ডিবির পুলিশের সদস্যরা। গ্রেফতারের পর রাত ১টা ১৫ মিনিটে তাকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। গত ২৮ অক্টোবরের নাশকতা মামলায় আমীর খসরুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে গুলশান থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) তাদের আদালতে তোলা হয়।
রাজধানীর পল্টন থানায় নাশকতা ও পুলিশের অস্ত্র ছিনতাইয়ের মামলায় আদালত তাদের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে নেয়া বাকি আসামিরা হলেন- ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সদস্য সচিব সাজ্জাদুল মিরাজ ও গোলাম কিবরিয়া।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করে বিএনপি। মহাসমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা অনেকে সরকারবিরোধী ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। এরপর দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
এ সময় কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালানো হয়। এক পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গত রোববার (২৯ অক্টোবর) বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা হয়।
এ মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও আহমেদ আজম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীকে আসামি করা হয়।
এরপর থেকে দলটির প্রায় সব নেতাই আত্মগোপনে ছিলেন। মামলার পরই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেফতার করা হয়। এই মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এরপর দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের উভয়কে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
আমির খসরুও একই মামলার আসামি হওয়ায় এবার তাকেও গ্রেফতার করা হলো। এবং আজ শুক্রবার আদালতে তুলে তার ১০ দিনের রিমান্ড চাইবে পুলিশ।