জাতীয় ডেস্ক:
নিজের নির্বাচনী এলাকার (রংপুর) দ্রব্যমূল্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আমার এলাকায় কোনো কষ্ট নেই। আমাদের এখানে প্রচুর আলু উৎপাদন হয়। এখানকার নারীরা দিনে তিনবার করে লিপস্টিক লাগান, চারবার করে স্যান্ডেল বদলান।
বুধবার (৮ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে ন্যাশনাল ট্যারিফ পলিসি মনিটরিং ও রিভিউ কমিটির সভাশেষে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
সবকিছুর দামের প্রভাব নিয়ে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘যদি আপনারা ইতিবাচক হোন, তাহলে এই প্রভাব কাটানো সম্ভব হবে। বৈশ্বিক পরিস্থিতিসহ সার্বিক কারণে এটি হয়েছে। কাজেই এটিকে বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচনে প্রভাব ফেলা ঠিক হবে না। এটি নির্ভর করে আপনারা কতটুকু ইতিবাচক হবেন, তার ওপর।’
নিজের ভোটার এলাকায় দ্রব্যমূল্য নিয়ে ভোটারদের প্রশ্নের মুখে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ধরেন, আমার এলাকার মানুষের কষ্ট নেই। কারণ তারা আলুর দাম পাচ্ছে। আমাদের তো কৃষিভিত্তিক এলাকা। একেক এলাকা একেক রকম। ঢাকা শহরে যে নির্বাচন করবে, তার অনেক সমস্যা। কিন্তু আজ থেকে ২০ বছর আগে আমার এলাকায় ১০টি মোটরসাইকেল ছিল। তখন আমি প্রথম নির্বাচন করি। আজকে সেখানে হাজার হাজার মোটরসাইকেল।
মন্ত্রী তার নিজের ভোটার এলাকাকে আলুভিত্তিক বা কৃষিভিত্তিক উল্লেখ করে বলেন, তাদের কোনো কষ্ট নেই। সেখানকার নারীরা দিনে তিনবার করে লিপস্টিক লাগাচ্ছে। চারবার করে স্যান্ডেল বদলাচ্ছে। আমি খুব ভালো জানি আমার কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সারা দেশের অবস্থা ভিন্ন। শহরের দিনমজুর ও নিম্নশ্রেণির মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ নিয়ে বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতাদের অসন্তোষ প্রকাশ করে শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সমাবেশ ডাকার বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেখেন, একশ ভাগ শান্তি ঠিক করা যায় না। কেউ না-কেউ খুশি হবেন, কেউ অখুশি হবেন। যারা খুশি না, তারা যদি ২০ হাজার টাকা বেতন পেতেন, তাহলে তারা খুশি হতেন। আমাদের একটি জায়গায় আসতে হবে, যেখানে দুপক্ষই রক্ষা হয়। সেখানে ১০০ ভাগ সন্তুষ্ট করা যায় না।
তিনি আরও বলেন, ‘গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতনই কেবল বাড়ানো হয়নি, তাদের বেসিকের অ্যামাউন্টও বাড়ানো হয়েছে। আপনারা জানেন, সাড়ে ১২ হাজার টাকা বেতনের সঙ্গে দিনে যদি দুই ঘণ্টা ওভার টাইম করে, একটি হাজিরা বোনাস পান তারা। কাজেই যার বেতন সাড়ে ১২ হাজার টাকা, সে কিন্তু ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা পেতে পারবেন। এই কথাটি সাধারণভাবে জানা যায় না। এরপর প্রত্যেককে ফ্যামিলি কার্ড দেয়া হবে, তাতে মাসে অন্তত ৫০০ টাকা সাশ্রয় হবে।’
বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে যেটি দেওয়া হয়েছে, সেটা ভালো বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, তারপরেও কিছু বাদ থেকে যায়। আমার মনে হয়, অধিকাংশ মানুষই সেটি মেনে নেবেন।