অনলাইন ডেস্ক:
বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের করা চুক্তিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ‘পাশ কাটিয়ে’ শুল্ক ও কর অব্যাহতির মাধ্যমে প্রায় ৪০ কোটি ডলার (সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা) কর ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধান শুরু করেছে।
বুধবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
আক্তার হোসেন বলেন, সাবেক মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস (চুক্তির সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব ছিলেন) এনবিআরকে পাস কাটিয়ে আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করে সরকারের সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দেয়ার অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তথ্য সংগ্রহ করছেন। প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ হলে বিস্তারিত বলা জানা যাবে বলে উল্লেখ করেন দুদকের মহাপরিচালক।
এনবিআরের পূর্ববর্তী এক তদন্তে উঠে আসে যে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই মাস পর্যন্ত ভারতীয় আদানি গ্রুপের কাছ থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের বিপরীতে ৩৯ কোটি ৭৩ লাখ ৭১ হাজার ৪৬৭ ডলার শুল্ক ও কর ফাঁকি দেয়া হয়েছে।
এছাড়া, এ চুক্তির সময় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর অনুমোদন ছাড়াই শুল্ক ও কর অব্যাহতি প্রদান করা হয়, যা এনবিআরের তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে।
২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করে। আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার। ৮০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে এ কেন্দ্রে। এতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২৫ বছর ধরে কিনবে বাংলাদেশ। প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিলে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় একই বছরের জুনে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের মোট বিদ্যুতের চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ হচ্ছে। তবে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার উচ্চ মূল্যের কারণে চুক্তি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আদানির সঙ্গে পিডিবির চুক্তি পর্যালোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত একটি কমিটি কাজ করছে।