আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের রাজস্থানের কোটায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা রোধে হোস্টেলগুলোতে এক অদ্ভুত কৌশল নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হোস্টেলগুলোর কক্ষে কক্ষে সিলিংফ্যানগুলোতে স্প্রিং লাগানো হচ্ছে। যাতে সিলিং ফ্যানে দড়ি, গামছা বা বিছানার চাদর জড়িয়ে গলায় ফাঁস দিতে গেলে সেই ফ্যান ঝুলে পড়ে।
রাজস্থানের কোটায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হোস্টেলগুলোতে সম্প্রতি একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেই চলেছে। সবশেষ গত মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাতে আত্মহত্যা করে মারা যান ১৮ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি’র (আইআইটি) জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার (জেইই) জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। এটা ছিল চলতি আগস্ট মাসের চতুর্থ ঘটনা। আর চলতি বছরের (২০২৩ সালে) ২২তম আত্মহত্যা। যা গত ৮ বছরে সর্বোচ্চ।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্রাবাসগুলোতে হোস্টেল কক্ষের সিলিং ফ্যান থেকে গলায় দড়ি বা গামছা বা বিছানার চাদর বেঁধে ঝুলে আত্মহত্যার ঘটনাই বেশি ঘটছে। এতে রাজ্যজুড়ে উৎকণ্ঠা বেড়েই চলেছে। স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন কর্তৃপক্ষও। ক্রমবর্ধমান আত্মহত্যা কিভাবে রোধ করা যায় সেটাও ভাবছেন কর্মকর্তারা।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন মতে, চলতি সপ্তাহে এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার পরই কোটা জেলা প্রশাসন সমস্যাটি মোকাবেলার জন্য একটি অদ্ভুত ও বিতর্কিত কৌশল অবলম্বন করেছে। ছাত্রাবাসের হোস্টেলগুলোতে স্প্রিংযুক্ত সিলিং ফ্যান লাগানো হচ্ছে।
আত্মহত্যা রোধের নতুন এই কৌশল নিয়ে কোটা জেলা প্রশাসক ওম প্রকাশ বুঙ্কার বলছেন, ‘ছাত্রাবাসগুলোতে অধ্যয়নরত ও বসবাসরত শিক্ষার্থীদের মানসিক সমর্থন ও কোচিং শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা রোধ করাই আমাদের লক্ষ্য।’
শিক্ষার্থী আত্মহত্যার মর্মান্তিক ঘটনার পেছনের কারণগুলো বহুমুখী-একাডেমিক, শারীরিক ও মানসিক চাপ। মূলত শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতামূলক বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতে তাদের মধ্যে তীব্র মানসিক চাপ ও স্বাস্থ্য সংকট তৈরি হচ্ছে। সেই চাপ সামলাতে না পেরে অনেকেই আত্মহত্যা করছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপের কারণে হোক কিংবা জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার ইঁদুরদৌড়ই হোক, মৃত্যুর মিছিল চলছেই। বিষয়টা শিক্ষার্থীদের বাবা-মা তথা অভিভাবকদের মধ্যে একটা আতঙ্ক তৈরি করেছে।
আত্মহত্যার ঘটনা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে রাজস্থান হাইকোর্ট ছাত্রদের মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষ করে রাজ্যের কোচিং সেন্টারগুলোতে অধ্যায়নরত ছাত্রদের আত্মহত্যা এড়ানোর বিষয়ে সুপারিশ চেয়েছে। শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক কাউন্সেলিংয়ে নজর দেয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে আদালত।