আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের চন্দ্রাভিযান সফল হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার (২৩ আগস্ট) ভারতের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই লাইভ বক্তব্যে মোদি বলেন, ভারত আজ ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। খবর ইন্ডিয়া টুডের।
ব্রিকস সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লাইভ বক্তব্যে মোদি বলেন, ‘আজ ভারতের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। আজকের এই দিনটি ভারতের ইতিহাস চিরদিন মনে রাখবে, এবং আমাদেরকে এক নতুন ভবিষ্যতের দিকে পরিচালিত করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘টিম চন্দ্রযানকে, বিজ্ঞানীদের আমার শুভেচ্ছা। তারা এই মুহূর্তটির জন্য বছরের পর বছর ধরে পরিশ্রম করেছেন। ১৪০ কোটি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা।’
‘ভারতের উদীয়মান ভাগ্যের আহ্বান এই মুহূর্তে। অমৃতকালের আহ্বান। অন্তরীক্ষে নতুন ভারতের উদয়। আমি এখন দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশবাসীর সঙ্গে সঙ্গে আমার মনও এখানেই ছিল।’
বুধবার (২৩ আগস্ট) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় চাঁদে অবতরণ করতে শুরু করে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। ৬টা ৪ মিনিটে এটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল অবতরণ করে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের আর কোনো দেশ এ উপগ্রহের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছাতে পারেনি।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণ দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করেছে। এদিন কোটি কোটি মানুষ ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছে। এ উপলক্ষে দেশটির সব স্কুল খোলা রাখা হয়। ব্রিকস সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভার্চুয়ালি ইসরোর আয়োজনে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এর আগে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন চাঁদের বুকে সফলভাবে মহাকাশযান অবতরণ করিয়েছে। এখন তাদের সঙ্গে চতুর্থ দেশ হিসেবে যোগ হলো ভারতের নাম।
গত ১৪ জুলাই চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে চন্দ্রযান-৩। এরপর ৩৯ দিনে প্রায় ৩ লাখ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এটি চাঁদে পৌঁছায়। এ যানের সঙ্গে আছে একটি ল্যান্ডার, একটি রোভার ও একটি প্রোপালশন মডিউল। সব মিলিয়ে এর ওজন ৩ হাজার ৯০০ কেজি।
রোভার প্রজ্ঞান আগামী দুই সপ্তাহ ধরে চন্দ্রপৃষ্ঠের খনিজ গঠনের স্পেকট্রোমিটার বিশ্লেষণসহ একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এবারের অভিযানের লক্ষ্য হচ্ছে চাঁদে পানির উপস্থিতি সম্পর্কে আরও তথ্য জানা।
যদি পর্যাপ্ত পানির উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তা হবে চাঁদের অন্যতম মহামূল্যবান খনিজ সম্পদ। এর আগে ভারতের চন্দ্রযান-১ ও চন্দ্রযান-২ নামে দুটি অভিযান ব্যর্থ হয়।