হোম অর্থ ও বাণিজ্য অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে ইউক্রেন যুদ্ধ!

বাণিজ্য ডেস্ক :

ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাব পড়বে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের অর্থনীতিতে। ইউক্রেন ও রাশিয়া তো ক্ষতিগ্রস্ত হবেই ক্ষতির মুখে পড়বে পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনীতিও। তবে যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে ইউক্রেনের। ধসে পড়বে দেশটির অর্থনীতি।

২০১৩ সালে ক্রিমিয়া নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ইতোমধ্যেই দেশটির আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ২৮০ বিলিয়ন ডলার। ক্রিমিয়া হাতছাড়া হওয়ায় ইউক্রেন জিডিপি হারিয়েছে ৫৮ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে রাশিয়ার ক্ষতিও কম হবে না। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের অবরোধের মুখ পড়বে দেশটি। ইউরোপে তেল ও গ্যাস রফতানি করতে পারবে না মস্কো। আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং চ্যানেল সুইফট থেকেও বের করে দেওয়া হতে পারে রুশ ব্যাংকগুলোকে। এতে তাদের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক লেনদেন কঠিন হয়ে পড়বে।

অপরদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে পশ্চিমারাও। ইউরোপের প্রাকৃতিক গ্যাসের ৪০ শতাংশই যোগান দেয় রাশিয়া। দেশটির জ্বালানি খাতে রয়েছে পশ্চিমা জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিপুল বিনিয়োগ। রাশিয়ার এক তৃতীয়াংশ তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রসনেফট এর ২০ শতাংশ শেয়ারের মালিক ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম বিপি।

রাশিয়ার প্রথম এলএনজি প্লান্ট শাখালিন ২ এর ২৮ শতাংশ শেয়ারের মালিক ডাচ প্রতিষ্ঠান শেল। শাখালিন ১ প্ল্যান্টে বিনিয়োগ আছে মার্কিন জ্বালানি প্রতিষ্ঠান এক্সনেরও।

অস্ট্রিয়ার রাইফাসেন ব্যাংক ইন্টারন্যাশনালের গত বছরের মুনাফার ৪০ শতাংশই এসেছিল রাশিয়া থেকে। হাঙ্গেরির ওটিপি এবং ইউনিক্রেডিটের ৭ শতাংশ মুনাফা আসে দেশটি থেকে।

এছাড়া পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের ব্যাংকের মধ্যে ফ্রান্সের ২৪ বিলিয়ন, অস্ট্রিয়ার ১৭ বিলিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রের ১৬ বিলিয়ন, জাপানের ১০ ও জার্মানির বিভিন্ন ব্যাংকের ৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আছে রাশিয়ায়। জার্মান মাল্টিন্যাশনাল মেট্রো এজির মুনাফার ১৭ শতাংশ এসেছে দেশটিতে অবস্থিত তাদের ৯৩টি স্টোর থেকে।

সংঘাত শুরু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে যেতে পারে খাদ্য পণ্যের দাম। রাশিয়া বিশ্বের প্রথম ও ইউক্রেন তৃতীয় বৃহত্তম গম রফতানিকারক দেশ। অপরদিকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ভুট্টা রফতানিকারক ইউক্রেন।

সেই সঙ্গে অস্থির হয়ে উঠতে পারে তেলের বাজারও। বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান জে পি মরগান জানিয়েছে, সংঘাতের জেরে তেলের দাম উঠে যেতে পারে ব্যারেল প্রতি ১৫০ ডলারে । ফলে পুরো বিশ্বের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে প্রায় এক শতাংশ। পাশাপাশি তা বিশ্বের মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়ে দিতে পারে ৭ দশমিক ২ শতাংশ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন