এআর সোহেব চৌধুরী, চরফ্যাশন (ভোলা):
অতিবর্ষা ও জোয়ারের পানিতে ধান ও সবজির ক্ষেত খামারের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চরফ্যাশন উপজেলার চরাঞ্চলের পানের বরজ। ভাদ্র মাসের ধারাবাহিক বর্ষনে উপকূলের নিম্নাঞ্চল ও বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে পানের বরজের ব্যপক ক্ষতি হওয়ায় হতাশায় ভোগছেন পান চাষিরা।
এদিকে বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে নেয়া ঋণগ্রস্ত পান চাষিরা জানান, ঋণের চাপে এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে উপক্রম হয়েছে। আসলাপমপুর খদেজাবাগ গ্রামের পান চাষি দুলাল কৃষ্ণ ও চৈতালী রানিসহ একাধিক পান চাষি বলেন, করোনা কালিন সময়ে পানসহ অন্যান্য চাষাবাদে আমরা পর্যাপ্ত ক্ষতির মুখে পড়েছি বর্তমানে বৃষ্টি বর্ষার পানি ও এলাকা সংলগ্ন নদী হওয়ায় জোয়ারের পানিতে খাল ও জলাশয় ভরে থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পানের বরজের গোড়া পচে যাচ্ছে।
দুলারহাট নিল কোমলের চর যমুনা ও নুরাবাদের বিজয় শিল,নিখিল চন্দ্র,ফজল হাওলাদারসহ একাধিক পান চাষি বলেন, বর্ষার পানি জমে থাকার জন্য আমাদের হাজার,হাজার পানের লতা মরে গেছে। ধার দেনা পরিশোধ করবো কিভাবে আমাদের জানা নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,উপজেলার আহমদপুর,চর কলমি,আঞ্জুরহাট,কুকরি-মুকরি, ওসমানগঞ্জ,মাদ্রাজ,হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নসহ অন্যান্য এলাকা থেকে প্রতিবছরে কোটি কোটি টাকার পান ও সুপারি ঢাকা,চট্টগ্রামসহ অন্যান্য জেলাগুলোতে রপ্তানি করা হয়।
ঘূর্ণিঝড় ফনি,আমফান ও করোনাকালিন সময় এবং সম্প্রতি ধারাবাহিক বর্ষা এবং জোয়ারের ফলে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এসব এলাকার প্রায় পাঁচ হেক্টর জমির পানের বরজ নষ্ট হয়েছে। এসব পানের বরজ নষ্ট হওয়ায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে চাষিরা জানান।
চরফ্যাশন বাজারের একাধিক পাইকারি পানের আড়ৎদার ও খুচরা বিক্রেতারা জানান, পানের লতা মরে যাওয়ায় চাষিরা হুডা পান (পানের ঝড়া পাতা) বাজারে বিক্রি করতে আসলে এসব পান খরিদদাররা ক্রয় করছেনা ফলে হাট প্রতি ব্যবসায় লোকসান গুনছি।
এসব চাষিরা সরকারি সহযোগীতার পাশাপাশি ইউনিয়ন পর্যায়ে জলাবদ্ধতা নিরশনে আরোও উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালু করার জন্য দাবি জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু হাসনাইন জানান, লতা মরে যাওয়ায় পানের উৎপাদন কমেছে। বিগত বর্ষার জলাবদ্ধতায় প্রায় ৫ হেক্টর জমির পান নষ্ট হয়েছে। কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত পানের বরজের তালিকা করে সরকারি সহায়তার জন্য চেষ্টা করা হবে।