জাতীয় ডেস্ক :
সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের সমৃদ্ধির পাশাপাশি আধুনিকায়নের পথে সেনাবাহিনী। সক্ষমতায়ও অন্য দেশের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। দিন দিন বাড়ানো হচ্ছে সক্ষমতা, এ জন্য জোর দেয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে কক্সবাজারের রামু সেনানিবাসে আন্তঃফরমেশন অ্যাসল্ট কোর্স প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
করোনা মহামারির দুই বছর পর কক্সবাজারের রামু সেনানিবাসে শুরু হয় আন্তঃফরমেশন অ্যাসল্ট কোর্স প্রতিযোগিতা। অংশ নেয় ১৬টি বড় ও ছোট ফরমেশন দল। বৃহস্পতিবার সকালে সেনাপ্রধানের উপস্থিতিতে শুরু হয় শ্রেষ্ঠ দুই দলের মহড়া।
মহড়াতে দেখা যায়, এক কঠিন প্রতিবন্ধকতা। একের পর এক কঠিন প্রতিবন্ধকতাকে ডিঙিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া। কাঁধে ভারী অস্ত্র, শরীরে রয়েছে প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ। এসব নিয়ে কখনো রশি বেয়ে ওপরে ওঠা, কখনো লাফিয়ে সুউচ্চ দেয়াল পার হওয়া, আবার কখনো ঝুলন্ত রশিতে অবস্থান নেয়া। এরপর কাঁটাতারের নিচ দিয়ে পার হয়ে দৌড়ানো, তারপর সব বাধা পেরিয়ে যুদ্ধের রণক্ষেত্রে অংশগ্রহণ। এ জন্য একজন সৈনিক সময় ব্যয় করেন মাত্র ২ থেকে ৩ মিনিট। শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে এভাবেই প্রস্তুত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একেকজন সৈনিক। পরে চ্যাম্পিয়ন ১০ পদাতিক ডিভিশন ও রানারআপ ৬ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেড দলের সদস্যদের মেডেল ও দুইজন সেরা প্রতিযোগী এবং চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ ট্রফি হাতে তুলে দেন সেনাপ্রধান।
সমাপনী অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যত আধুনিক অস্ত্র আমরা কিনি না কেন, যত ডিজিটালাইজেশন করি না কেন, যারা এটা পরিচালনা করবে তারা যদি সুদক্ষ না হয় তাহলে সমস্ত কিছু ব্যর্থ হবে। এজন্য দরকার কঠোর প্রশিক্ষণ। সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রশিক্ষণই সর্বোত্তম কল্যাণ। এই মূল মন্ত্র ধারণ করে সেনাবাহিনী এগোচ্ছে। যতগুলো প্রশিক্ষণ সেনাবাহিনী করে, তার মধ্যে অ্যাসল্ট প্রশিক্ষণটা খুবই কঠিন ও কাছাকাছি যুদ্ধের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। রণকৌশলে শারীরিক যে কসরত দরকার হয়, সেসব অ্যাসল্ট প্রশিক্ষণে আছে। দুবছর করোনার জন্য বন্ধ থাকার পরও এবার প্রশিক্ষণে দেখলাম আগের যে গড় সময় ছিল তার চেয়ে সময় কমেছে। তার মানে হল, আগের চেয়ে সেনাবাহিনী অনেক বেশি দক্ষতা অর্জন করেছে।’
সমাপনী বক্তব্যে সেনাপ্রধান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘে এক নম্বর শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। অনেক ত্যাগ, পরিশ্রম ও দক্ষতা দিয়ে অর্জিত এ কৃতিত্ব ধরে রাখতে কাজ করে যাওয়ার আহ্বানও জানান সেনাপ্রধান।’
এছাড়াও প্রশিক্ষণে মনোযোগ দেয়ার পাশাপাশি মূল দায়িত্ব মাতৃভূমিকে বহিঃশত্রু আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে হবে। এ জন্য সেনাবাহিনীকে সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে। যে কোনো প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগের মানসিকতা থাকতে হবে বলেও জানান সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ।
তিন দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় ১০ পদাতিক ডিভিশন চ্যাম্পিয়ন ও ৬ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেড রানারআপ হয়।