খুলনা অফিস :
খুলনায় ঈদের পর থেকে খুব অল্প সময়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আগামী ১১জুন বৃহস্পতিবার থেকে নগরীর সব দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এছাড়া ফুটপাথে কোন হকার অবস্থান করবে না। ইজিবাইকসহ অন্যান্য যান চলাচল সীমিত করা হবে। মানুষের ভিড়, মাস্ক ছাড়া চলাচল বরদাশত করা হবে না। মাস্ক ব্যবহারের নামে নাক-মুখ উন্মুক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।মঙ্গলবার খুলনা জেলা করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গঠিত কমিটির সভায় এ সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় আগামী ১১জুন হতে ২৫ জুন পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা ও কার্যক্রম বাড়ানো, সন্ধ্যার পর রাস্তাঘাটে চলাচল বন্ধ রাখা এবং ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান এবং জরুরি সেবা বাদে সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে দুপুরে সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত সভায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার ড. মু: আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ও খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা এবং ঢাকা থেকে অনলাইনে যুক্ত হন খুলনা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মোঃ কামাল হোসেন।
সভায় জানানো হয়, এই মুহুর্তে খুলনায় ২১৭ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪২ জনই খুলনা নগরীতে।সে কারণে অধিক সংখ্যায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজে আরও একটি পিসিআর মেশিন স্থাপন করা হবে। বর্তমানে ঐ ল্যাবে দৈনিক সর্বোচ্চ ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা যায় যা যথেষ্ট নয়। এছাড়া সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজেও একটি করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।খুলনায় ক্রমাগতভাবে কোভিড-১৯ রোগী বাড়তে থাকলে তাদের চিকিৎসায় খুলনা সদর হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ৪২টি বেড প্রস্তত করে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট লাঘবে ডায়াবেটিক হাসপাতালে দুটি অক্সিজেন হাইফ্লো নজেল ক্যানেল ক্রয়েরও সিদ্ধান্ত হয়। কোভিড-১৯ রোগীদের কিডনি ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন পড়লে শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের পাঁচটি ডায়ালাইসিস বেড ব্যবহার করা হবে। খুলনার সকল বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো সংগ্রহ করে খুলনা কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হবে। করোনাভাইরাস নমুনা সংগ্রহের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে আরও একটি গাড়ি সিভিল সার্জনকে দেওয়া হবে।নগরীর রয়্যাল মোড়ে অবস্থিত দূরপাল্লার গাড়িগুলোর কাউন্টার থেকে যাত্রী উঠা-নামা বন্ধ থাকবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসালম, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সী মোঃ রেজা সেকেন্দার, খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ, খুলনার সিভিল সার্জন ডা: সুজাত আহমেদ, খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার ম. জাভেদ ইকবাল, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আসাদুজ্জামান খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) জিয়াউর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক মোঃ আব্দুল আলিম, জেলা শিক্ষা অফিসার খোন্দকার রুহুল আমিন, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম নজরুল ইসলামসহ অন্যান্য সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
পূর্ববর্তী পোস্ট