তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি :
গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষানাবেক্ষণ (টিআর) প্রকল্পের কাজ না কওে শ্মশানের নামে সংসদ সদস্যের বরাদ্ধের এক লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে মহাশ্মশান কমিটির ভূয়া সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিষখালী ইউনিয়নের ইসলামকাটি ব্রীজ সংলগ্ন মহাশ্মশানের অনুকুলে সংস্কারের জন্য এক লাখ টাকা এমপি‘র কোটায় বরাদ্ধ দেয়া হয়। টিআর প্রকল্পের সভাপতি অসিত কুমার মুখাজী ও বিশ্বনাথ আঢ্য(কেদার) দুই মাস পূর্বে টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন। এর আগে বিশ্বনাথ আঢ্য শ্মশানের উন্নয়ন কাজে বাধা দিয়ে টিকতে না পেরে সেখান থেকে পালিয়ে গেলেও অন্যের করা নির্মান করা শ্মশানের চিতার ছবি তুলে পিআইও অফিসে জমা দিয়ে নগত সরকারী এক লাখ টাকা হজম করে ফেললেন এমন অভিযোগ কপোতাক্ষ মহা শ্মশান কমিটির। সরকারী প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎতের ঘটনায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, দূনীতি দমন কমিশন বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে ।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তালা উপজেলার কপোতাক্ষ নদের ইসলামকাটি ব্রীজের পশ্চিম পাশের খলিষখালী ইউনিয়নের মহাশ্মশান। ইউনিয়নের কাটাখালী, কাদিকাটি, হাজরাপাড়া, খলিষখালী গ্রামসহ সনাতন ধর্মের মানুষের মৃত্যুর পর এই শ্মশানে দাহ বা অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। কয়েক যুগ ধরে কপোতাক্ষ নদের তীরে এই শ্মশান প্রায়ত বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বদেশ রায় চৌধুরী, স্কুল শিক্ষক সুনীল কুমার দে, অসিত কুমার হোড়, চন্ডি হোড় সহ খলিষখালী গ্রামের কয়েকজন প্রবীন মানুষ দেখাশুনা করত। এজন্য শ্মশানের একটি পরিচালনাসহ উন্নয়ন কমিটি করা হয়েছিল। তৎকালিন সেই কালিন কমিটির সভাপতি ছিলেন প্রায়ত স্বদেশ রায় চৌধুরী, সাধারন সম্পাদক মাষ্টার সুনীল কুমার দে। এই কমিটি দীর্ঘদিন কার্যক্রম চালানোর পর গত ৫ বছর পূর্বে সভাপতি স্বদেশ রায় চৌধুরী মারা যান।
এদিকে বিগত দিনে কমিটির আরও দুই সদস্য মারা যান। পরে সাধারন সম্পাদক সুনীল কুমার দে অনেকটা একক ভাবে শ্মশানের দেখভাল করে আসছিল। চলতি বছরের ২৮ মে কপোতাক্ষ নদের তীরে এই শ্মশাননের সার্বিক উন্নয়নের জন্য একটি পূনাঙ্গ কিমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সভাপতি অশোক লাইড়ী, সাধারন সম্পাদক মাষ্টার সুনীল কুমার দে, কোষাধাক্ষ মাষ্টার বিধান চন্দ্র দাস। অন্যান্য পদসহ কিমটির সদস্য সংখ্যা ১০১। এদিকে বর্তমান অশোক লাইড়ী, সুনীল দের নেতৃত্বে কিমিটি শ্মশানের নতুন চিতা নির্মান,মরদেহ স্নানের জন্য স্নানাগার তৈরী করেছেন।
কমিটির কোষাধাক্ষ মাষ্টার বিধান চন্দ্র দাশ জানান, শ্মশানের জমির জটিলাতা নিরশনে আমিন দিয়ে মাপজরিপ করে সীমানা নির্ধারনে কাটা তারের বেড়া দেয়া হয়েছে। তিনি জানান,শ্মশানের বিদ্যুৎ সংযোগসহ মটর স্থাপন করা হয়েছে। শ্মশানে আগতদের জন্য দৃষ্টিনন্দন বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শ্মশানের নিজস্ব নামে ব্যাংকে একাউন্ট খোলা আছে। গত ৫ মাস ধরে শ্মশানে সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ড করা হচ্ছে। যা দৃশ্যমান। কমিটির লোকজন এবং এলাকার দানশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে কপোতাক্ষ নদের ইসলামকাটি ব্রীজের পাশে খলিষখালী ইউনিয়নের ৮ গ্রামের মানুষের দাহ করার জন্য এ শ্মশানের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম করা হচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, সাতক্ষীরা -১(তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ তার অনুকুলে সরকারী বরাদ্ধ থেকে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষানাবেক্ষণ (টিআর) বিশেষ তৃতীয় পর্যায়ে প্রকল্পের থেকে তালা উপজেলার ইসলামকাটি ব্রীজ সংলগ্ন মহাশ্মশান সংস্কারের নগত এক লাখ টাকার একটি প্রকল্প দেন। সংস্কার প্রকল্পের খলিষখালী গ্রামের অনিল কুমার মুখার্জির ছেলে অসিত কুমার মুখার্জীকে সভাপতি একই গ্রামের মনিন্দ্র আঢ্যর ছেলে বিশ্বনাথ আঢ্য ওরফে কেদার কে সেক্রেটারী। এছাড়া শিবপদ দত্তের ছেলে মহানন্দ দত্ত, পরিতোষ রায়ের ছেলে স্বপন রায়, যতিন্ত্র নাথ দে এর ছেলে অসীত দে কে প্রকল্পের সদস্য করা হয়।
সংসদ সদস্য স্বাক্ষরিত এই শ্মশান সংস্কার প্রকল্পের সভপতি সেক্রেটারী কোন প্রকার সংস্কার কাজ না করে নগত এক লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ বিষয়ে তালা উপজেলা প্রকল্পবাস্তয়ন কর্মকর্তা জানান, এমপি সাহেব টিআর তৃতীয় প্রকল্পের থেকে ইসলামকাটি ব্রীজের পশ্চিম পাশে শ্মশানের সংস্কারের জন্য এক লাখ টাকার বরাদ্ধ দেন। কাজ করার জন্য অসিত কুমার মুখাজী কে সভাপতি ও বিশ্বনাথ আঢ্যকে সেক্রেটারী করে একটি প্রকল্প কমিটিও দেন। পরে প্রকল্পের সভাপতি কাজ শেষ হয়েছে মর্মে একটি শ্মশানের নির্মান করা একটি চিতার ছবি অফিসে জমা দিয়ে নগত এক লাখ টাকা তুলে নিয়ে গেছে। উন্নয়ন কাজের ছবি দেখে আমরা টিআর প্রকল্পের বিল ছেড়ে দিয়েছি। অন্যের করা শ্মশানের চিতার ছবি অফিসে দিয়ে থাকলে সে দায় তো প্রকল্প কমিটির বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস জানান , বিষয়টি তদন্ত করে ব্যাবস্থা ন্ওেয়া হবে ।