হোম অর্থ ও বাণিজ্য ব্যবসায়ীদের অজুহাত আর যুক্তির ফাঁদে অসহায় ক্রেতা!

বাণিজ্য ডেস্ক :

আতঙ্কের নাম বাজার। নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত যেন ঊর্ধ্বমুখী বাজারের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। চাল, ডাল, চিনি, আটার পাশাপাশি সরকারের দাম নির্ধারণের আগেই ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে আরও এক দফা। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার দায় বিক্রেতারা দিচ্ছেন বড় ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকট তৈরি করাকে। এদিকে বাজারে ক্রেতা কম। অসহায় ভোক্তা এখন বেঁচে থাকার তাগিদে ব্যয় সংকোচন করতে আগের চেয়ে খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। অপরদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের একটি দল বাজারে তদারকি অভিযান চালায়।

মহামারি করোনার ধাক্কা সামলে ওঠার আগে শুরু হয়ে যায় ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত। তার রেশ কাটতে না কাটতে এবার ডলারসংকট আর জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে আবারও অস্থিতিশীল দেশের বাজার। প্রতিবারই বাজারে বেড়েছে ভোগ্যপণ্যের দাম। সব সংকটের জোয়াল উঠেছে ক্রেতার ঘাড়ে।

গত ৩ আগস্ট ব্যবসায়ীরা ভোজ্যতেলে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত জানানোর আগেই টালবাহানা শুরু হয়ে গেছে বাজারে। পাইকারি ও খুচরা বাজারে সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে। ৫ লিটার বোতল ৮৮০ থেকে ৯১০ টাকা, যে যার মতো বিক্রি করছেন।

বাজারে প্রায় সব পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী উল্লেখ করে এক ব্যবসায়ী বলেন, সব পণ্যের দামই বাড়তি। আগে যে তেলের কার্টন কিনতে ৩ হাজার ৫০০ টাকা গুনতে হতো, সেই একই কার্টন আমাদের ৩ হাজার ৬০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

শুধু কি তেল! ডিম, মুরগি, সবজি থেকে শুরু করে টিস্যু পেপার। দাম বাড়ার তালিকা থেকে বাদ যায়নি কিছুই। ব্যবসায়ীদের অজুহাত আর যুক্তির ফাঁদে অসহায় ক্রেতা।

একেক দোকানি একেক দামে ভোজ্যতেল বিক্রি করছেন অভিযোগ করে এক ক্রেতা বলেন, সয়াবিন তেল কিনতে এসেছি। কেউ চায় ৯০০ টাকা। কেউ চায় ৯২০ টাকা। আবার কেউবা ৮৯০ টাকা চাচ্ছে। বাজার করতে এসে দেখি, পণ্যের দাম উল্টাপাল্টা। যে চিনি কয়েক দিন আগে ৮০ টাকায় কিনেছি, সেটি এখন ৯০ টাকা। সবকিছুর দামই ঊর্ধ্বমুখী। গ্রাম হোক বা শহর, বাঁচার কোনো সিস্টেম নেই।

এদিকে ক্রেতার স্বার্থরক্ষায় মোহাম্মদপুর পাইকারি খুচরা বাজারে অভিযান পরিচালনা করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। জ্বালানি তেলের দাম হিসাব করে দাম বাড়ার কথা সর্বোচ্চ এক টাকা, সেখানে ইচ্ছেমতো চালের দাম বাড়ানো হয়েছে।

অভিযানকালে সংস্থাটি কর্তারা জানান, ‘আমরা যদি পরিবহন খরচ হিসাব করি, তাহলে আমরা দেখতে পাব যে কেজিপ্রতি ২০ পয়সা, ৩০ পয়সা বা সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা বাড়তে পারে। কিন্তু আমাদের কাছে খবর এসেছে, একটি বিশেষ চক্র এ অজুহাত সামনে রেখে প্রতি কেজি চালের দাম ১০ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে বিক্রি করছে। আমরা কিছুটা অসংগতি পেয়েছি। আরও অসংগতি যদি পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই সেই চক্রটিকে আমরা শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব।’

অপরদিকে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে সংকট সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে বলে জানান ভোক্তারা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন