আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
দুর্নীতির অভিযোগে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দক্ষিণ কোরিয়ার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্যামসাং গ্রুপের উত্তরাধিকারী লি জে-ইয়ংকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। শুক্রবার (১২ আগস্ট) তাকে ক্ষমা করে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইওন সুক-ইয়ল।
দুর্নীতির দায়ে গত বছরের জানুয়ারিতে লি দোষী সাব্যস্ত হন। আড়াই বছরের কারাদণ্ডও হয় তার। ১৮ মাস কারাভোগের পর গত বছরের আগস্টে প্যারোলে মুক্তি পান তিনি।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিচারবিষয়ক মন্ত্রী হান ডং-হুন বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়া ‘জাতীয় অর্থনৈতিক সংকট’ মোকাবিলা করছে। এ অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে অবদান রাখার সুযোগ করে দিতে লিকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। এখন তাকে তার পদে পুনর্বহাল করা হবে বলেও জানান তিনি।
দক্ষিণ কোরিয়ায় দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত ব্যবসায়ী নেতাদের দেশের অর্থনৈতিক বিষয় বিবেচনায় মুক্তি দেয়ার দীর্ঘ ‘ঐতিহ্য’ রয়েছে। সেই ঐতিহ্যের সবশেষ উদাহরণ এ ঘটনা।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের এক হিসাব মতে, লি বিশ্বের ২৭৮তম ধনী ব্যক্তি। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৭৯০ বিলিয়ন ডলার। প্রেসিডেন্টের ক্ষমা লাভের ফলে লি আবারও তার কাজে ফিরতে পারবেন। কারাভোগ পরবর্তী পাঁচ বছরের যে বিধিনিষেধ তার ক্ষেত্রে দেয়া হয়েছিল, সেটাও আর থাকবে না।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিচার মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের কারণে জাতীয় অর্থনীতির গতিশীলতা ও প্রাণশক্তির অবনতি ঘটছে। অর্থনৈতিক মন্দা দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ অবস্থায় লিসহ অন্য যেসব ব্যবসায়িক নির্বাহী প্রেসিডেন্টের ক্ষমা পেয়েছেন, তারা বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গতিশীল রাখার কাজে নেতৃত্ব দিতে পারবেন।
৫৪ বছর বয়সী লি ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়ার আরও তিন ব্যবসায়ী প্রেসিডেন্টের ক্ষমা পেয়েছেন। লি স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের ভাইস প্রেসিডেন্ট। ২০১৪ সাল থেকে স্যামসাংয়ের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন তিনি।
সরকারি সুবিধা পেতে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন-হাইর ঘনিষ্ঠ বন্ধু চৌ সুন-সিলের অলাভজনক কোম্পানিকে ৩ কোটি ৬৩ লাখ ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন লি। এ কেলেঙ্কারির জেরে পার্লামেন্টে অভিশংসিত হন পার্ক।
২০১৭ সালের মার্চে পার্ক জিউন হাইকে বরখাস্ত করেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত। দুর্নীতির অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন ক্ষমতায় আসার পর তাকে ক্ষমা করে দেন। গত বছরের ডিসেম্বরে কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।