হোম জাতীয় যা বললেন ‘মায়ের জন্য পাত্র চাওয়া’ সেই অপূর্ব

জাতীয় ডেস্ক :

‘বাবা মারা গেছে, তাই আম্মুর জন্য মানানসই পাত্র খুঁজছি। ব্যবসায়ী বা জব হোল্ডার হলে ভালো। শিক্ষাগত যোগ্যতা কম হলেও সমস্যা নেই, তবে নামাজি হতে হবে।’ এমন শিরোনামের একটি পোস্ট সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মায়ের জন্য ফেসবুকে সন্তানের পাত্র খোঁজার এমন অভিনব পোস্ট সাড়া ফেলেছে পুরো দেশে। সাধুবাদ জানাচ্ছেন নেটিজেনরাও।

মায়ের একাকিত্ব দূর করতে ও মাকে ভালো রাখতেই মূলত ফেসবুকের একটি গ্রুপে পোস্টটি করেন ঢাকার কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা মোহাম্মদ অপূর্ব। অপূর্বের মায়ের নাম ডলি আক্তার। বয়স ৪২ বছর। পড়েছেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। দুই বছর আগে ক্যান্সারে বাবাকে হারান তিনি।

সময় সংবাদকে অপূর্ব বলেন, ‘বাবা মারা যাওয়ার বছরখানেক পরই মাকে জিজ্ঞাসা করি, তুমি কি আবার বিয়ে করতে চাও? তখন মা রাজি হয়নি। কিছুদিন পর আবার মাকে বলি তুমি কি একাকিত্বে ভুগছ? আমার কাছেও মনে হচ্ছিল মানুষ একা বাঁচতে পারে না। সে চিন্তা থেকেই তাকে বিয়ের কথা বলছিলাম।’

শুরুতে বিয়ের জন্য রাজি ছিলেন না ডলি আক্তার। তবে মাকে ভালো রাখতে, মায়ের একাকিত্ব দূর করতেই বারবার মায়ের সঙ্গে বিয়ে নিয়ে কথা বলেন অপূর্ব। এক পর্যায়ে সন্তানের ওপরই ছেড়ে দেন বিয়ের সিদ্ধান্ত।

অপূর্ব বলেন, ‘একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিল আম্মু ভালো নেই। তার কাউকে প্রয়োজন। কারণ আমি বা ভাইয়াও ব্যস্ত থাকি। মাকে সময় দিতে পারছিলাম না। তাই তিনি এ বিষয়টা আমাদের সিদ্ধান্তের উপরে ছেড়ে দেন।’

মায়ের বিয়ে নিয়ে সামাজিকভাবেও ছিল বাধা। তবে দাদা ও নানা বাড়ির সম্মতিতেই মায়ের জন্য পাত্র খুঁজছেন বলে জানিয়েছেন অপূর্ব।

তিনি বলেন, ‘অনেকেই ভাবে মায়ের বিয়ে দেব, এটা কেমন কথা? কিন্তু ইসলাম বলে, বিধবা কেউ রাজি থাকলে তাকে বিয়ে দিয়ে দেও। আমরা সেসব চিন্তা করেই এগিয়েছি। আমাদের পরিবারের সবার সম্মতি আছে।’

বিয়ের পর মা কোথায় থাকবে? সন্তান হিসেবে মায়ের সঙ্গে কি দূরত্ব বেড়ে যাবে? সে প্রশ্নও ছিল অপূর্বের কাছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি তো চাইব এলাকা বা আশপাশেই মায়ের বিয়ে হোক। যাতে চাইলেই আম্মুর কাছে যেতে পারি। তবে বিয়েটা তো আল্লাহর হাতে। তার যেখানে ভাগ্য লেখা আছে সেখানেই যাবে। এটা নিয়ে আমাদের কোনো আফসোস নেই। তবে একটু তো কষ্ট লাগবেই। আম্মু আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। তাকে দূরে যেতে দিতে খারাপ তো লাগবেই।’

অপূর্বরা দুই ভাই। বড় ভাই ইমরান হোসেন পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনিও বিবাহিত। রয়েছে ৫ বছরের এক সন্তানও। আর ছোট ছেলে ‘জি অ্যান্ড টেক’ নামে একটি অনলাইন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন