এম. জুবায়ের মাহমুদ, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) :
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের ১১৪ নং বাইনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় টি চলছে নানা অভিযোগে, নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। এ বিদ্যালয়টি দীর্ঘ দিন সরকারি হলেও এর স্যানিটেশন ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক। উন্নত টয়লেট ও উন্নত স্যানিটেশন এবং পানি নিস্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় ছাত্র- ছাত্রীরা একই টয়লেটে প্রতিদিন যৌথভাবে ব্যবহার করতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদেরকে আবার শিক্ষকদের কাছে টয়লেটের কারণে লাঞ্ছিত হতে হচ্ছে। সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিন মোড়ল এর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। ২৫ জুলাই স্কুল চলাকালীন ৩ টার সময় ইস্কুল মাঠে বাচ্চাদের খেলা করতে দেখে যায় তাদের কাছে জানতে চাইলে বলেন কিছুক্ষণ আগে আমাদের ছুটি হয়েছে দুই জন স্যার স্কুলে আসছিল প্রবীর কুমার সরদার ও মোঃ আমিনুর রহমান। প্রবীর স্যার একটা ক্লাস নিয়ে চলে যায় আরেকজন স্যার তিনটার দিকে চলে যান এবং বাকি তিনজন শিক্ষক স্কুলে আসেনি বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক (চলতি দায়িত্বে) দীপঙ্কর কুমার ঘোষ কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি স্কুলের কাজে উপজেলা শিক্ষা অফিসে ছিলাম এজন্য আমি যেতে পারিনি। সহকারী শিক্ষক আবু হাসান মোস্তাইন বিল্লাহ ও সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিন মোড়ল প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ছাড়াই স্কুলে অনুপস্থিত। আবু হাসান মোস্তাইন বিল্লাহ কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি প্রধান শিক্ষক এর কাছে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ছুটি নিয়েছিলাম। দুই জনের কেউ ছুটি নেইনি বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক,এদিকে শিক্ষার্থীরা স্কুলেও আসে নিয়মিত। শুধু নিয়মিত আসেন না শিক্ষক শিক্ষা ব্যবস্থার বদলে শিক্ষকরা দিনের পর দিন করে যাচ্ছেন দুর্নীতি। ইচ্ছা মত আসেন ইচ্ছা মত জান।
কোমলমতি শিক্ষার্থীরা স্কুলে এসে পুকুরে সাঁতার কেটে এবং মাঠে খেলাধুলা আর দৌঁড়ঝাঁপ শেষে বাড়ি ফিরে যায়। এতে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি ভেস্তে যাচ্ছে সরকারের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা।
স্কুলের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান, রুহুল আমিন স্যার অকারনে শিক্ষার্থীদের কে মারধর করেন এবং অকর্ত ভাষায় গালিগালাজ করে যার ফলে ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসেন না। বর্তমান সরকার ঝরে পড়া শিক্ষার্থী কমাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা উপকরণ সহ খাবারের ব্যবস্থা করেছে যাতে শিক্ষার্থীরা স্কুলগামী হয় তারপরেও এ ধরনের কিছু শিক্ষকের কারণে শিক্ষার্থীরা স্কুল যেতে চাই না।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জহুরুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন শিক্ষকরা স্কুল যাননি এটা আমার জানা নেই, প্রধান শিক্ষক গতকালকে মিটিং এ ছিল আজকে তো স্কুলে অনুপস্থিত থাকার সুযোগ নেই এবং শিক্ষার্থীদের মারধর করার কোন সুযোগই নেই। যদি এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটে থাকে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
শিক্ষার্থীদের মারধরের ব্যাপারে ও স্কুলে অনুপস্থিতির ব্যাপারে রুহুল আমিন স্যারের কাছে জানতে চাই তিনি বলেন ভাই শিক্ষার্থীদের কে একটু শাসন না করলে তারা পড়াশোনা করবে না এখন তো আর আগের মত মারধর নাই তবুও একটু শাসনে রাখতেই হয়। আমি একটু ব্যক্তিগত কাজে ছিলাম মনে করছিলাম দ্রুত যেতে পারবো কিন্তু কাজ মিটাতে আমার দুটো বেজে যায় তাই পৌঁছাতে পারিনি।
এদিকে সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে অভিভাবক দের ও অভিযোগ এর শেষ নাই, দিনের পর দিন এ রকম দুর্নীতি এবং অনিয়ম চললে দেশ ও জাতির জন্য বিরুপ প্রভাব ফেলবে। সবশেষে এই দুর্নীতিবাজ লোকদের আইনগত দ্রুত বিচার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।