খুলনা অফিস :
সুপার সাইক্লোন আম্পানে সরচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ খুলনার কয়রা উপজেলার সুন্দরবন ঘেষা আংটিহারায় ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাধ মেরামতে কাজ করছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বাধীন সমাজ কল্যান যুব সংস্থার সদস্যরা। গত পাচদিন ধরে দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা স্লুইচ গেটের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে শাকবাড়িয়া নদীর তীরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেঙ্গে যাওয়া প্রায় এক কিলোমিটার বাধ তারা মেরামত ও সংস্কারে কাজ করছে। বৃহষ্পতিবার এ সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী সকাল সাতটা থেকে দুপুর পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধের ভাঙ্গা অংশ মেরামত করে। এ সময় মেরামত কাজে অংশ নেয় সংগঠনের সভাপতি আবু সাইদ খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান, সহ-সভাপতি মোঃ আহাদ আলী খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মামুন কবির, সদস্য জিনারুল ইসলাম, মফিজুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, আতিয়ার রহমান, অসীম মন্ডল, সঞ্জয় মন্ডল, শাহিনুর রহমান, তাজমুল হক, আবু রায়হান খান, সোহেল হোসেন, রিয়াজ রহমান, হাসিবুল বাপ্পি, আসাদুল হক, মিরাজুল ইসলাম, সাখাওয়াত হোসেন, আব্দুল বারিকসহ ৫৫জন স্বেচ্চাসেবী। ইতিমধ্যেই এ সংগঠনের বাধ মেরামত কাজের সাথে যুক্ত হয়েছে এলাকার সাধারন মানুষও। আম্ফানের পর নদীতে পানি উচ্চতা বেশী থাকায় প্রতিদিন দুই বার লোকালয়ে ঢুকছে জোয়ারের পানি।এ পানির হাত থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষায় তারা দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা স্লুইচ গেটের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে বাধ মেরামতে নেমেছেন বলে জানান সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। বাধের ভাঙ্গা অংশ মেরামত করতে আরও ২/৩দিন লাগতে পারে। তাদের এ উদ্যোগকে স্থানীয়রা সাধূবাদ জানিয়েছেন।
স্বাধীন সমাজ কল্যান যুব সংস্থার সভাপতি আবু সাইদ খান জানান, ২০ মে আম্পানের আঘাতে কয়রার কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নগীর বেড়িবাধের প্রায় ৪০টি পয়েন্টে ভেঙ্গে উপজেলার প্রায় ৭৫ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়। কিন্তু ঝড় থামলেও বাধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে নদীর পানির প্রবল জোয়ারে প্রতিদিন এলাকা ডুবে যাচ্ছে। এরফলে এলাকার মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এলাকার মানুষকে নদীল পানির জোয়ারের হাত থেকে বাচাতে স্বাধীন সমাজ কল্যান যুব সংষ্থার ৮৫জন সদস্য মিলে বাধ মেরামত কাজ শুরু করে। গত পাচদিন ধরে তারা দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা স্লুইচ গেটের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে ভাঙ্গা বাধ মেরামতের কাজ করছেন। এ কাজে তাদের সাথে এলাকার মানুষও যুক্ত হয়েছে। আজকের একশো মিটারসহ বাধের অনেকটাই ইতিমধ্যেই মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। আগামী ২/৩দিন কাজ করলে তারা বাধ সম্পূন মেরামত করতে সক্ষম হবেন। এই স্থানটি দূর্গম ও তাদের সংস্থার কাছাকাছি হওয়ায় নিজ উদ্যোগেই করছেন। তবে আগামীতে বাধটি যেন সরকারীভাবে দ্রুত পুন:সংস্কার করা হয়। তাহলে এই এলাকার মানুষ সহায় সম্পদ নিয়ে বাচতে পারবে। তিনি আরও জানান, এই এলাকার মানুষ কোন ত্রান চান না। তারা সেনাবাহিনীর মা্ধ্যমে টেকসই করে নির্মান করা হয় সেজন্য দাবী জানান।
উল্লেখ্য,২০ মে আম্পানের আঘাতে কয়রার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের আংটিহারা, খাসিটানা, জোড়শিং, মাটিয়াভাঙা, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাতিরঘেরি, গাববুনিয়া, গাজিপাড়া, কাঠকাটা, কয়রা সদর ইউনিয়নের ৬নং কয়রা, ৪নং কয়রার পুরাতন লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকা, ঘাটাখালি, হরিণখোলা, মহারাজপুর ইউনিয়নের উত্তর মঠবাড়ি, দশালিয়া, লোকা, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের কালিবাড়ি, নয়ানি, শেখেরটেকসহ বেড়িবাঁধের ৪০ পয়েন্ট ভেঙে আবারও লোনা পানিতে সয়লাব হয় এলাকার ৭৫ভাগ।