আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
নতুন সংকটের মধ্যে পড়েছেন শ্রীলঙ্কার রাজাপাকসে পরিবার। প্রেসিডেন্ট পদ থেকে গোতাবায়া রাজাপাকসের সরে দাঁড়ানোর পর তার দুই ভাই মাহিন্দা ও বাসিলের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে শুক্রবার (১৫ জুলাই) নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট।
দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্র্যান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, আগামী ২৮ জুলাইয়ের আগে অনুমতি ছাড়া তারা দেশ ছাড়তে পারবেন না। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক দুই গভর্নরসহ তিন সরকারি কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন গোতাবায়া রাজাপাকসে। প্রথমে তিনি মালদ্বীপ যান, সেখান থেকে সিঙ্গাপুরে গিয়ে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। শুক্রবার স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধন বলেন, গোতাবায়া বৈধভাবে প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়েছেন। যা গতকাল থেকে কার্যকর হবে। এরপর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
এদিকে সরকারি ভবনগুলো থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) এ ঘোষণা দেওয়ার সময় প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণের চেষ্টা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন তারা।
বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারীদের এক মুখপাত্র বলেন, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, প্রেসিডেন্টে সচিবালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শান্তিপূর্ণভাবে উঠে যাচ্ছি আমরা।
ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পেয়ে সরকারি ভবনগুলো থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়ে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেন রনিল বিক্রমাসিংহে।
এরআগে ২০০ বছরের পুরনো প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের হাতে ছেড়ে দিতে বিক্ষোভকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির শীর্ষ বৌদ্ধ ভিক্ষু। প্রাসাদের মূল্যবান শিল্প ও চিত্রকর্ম সুরক্ষারও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ওমালপি সবিথা নামের ওই ভিক্ষু বলেন, ভবনটি আমাদের জাতীয় সম্পদ। এটির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। প্রাসাদের যথাযথ নিরীক্ষা হওয়া দরকার এবং তা কর্তৃপক্ষের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।
রাজাপাকসে পালিয়ে যাওয়ার পর ভবনটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এরপর হাজার হাজার পর্যটক প্রাসাদ ভ্রমণে আসেন। তারা প্রেসিডেন্টের ডাইনিংয়ে বসে খাওয়া-দাওয়াসহ সুইমিংপুলেও সাঁতার কাটেন।
টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, যারা আমার অফিসে গিয়েছেন, ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে তারা আমাকে দায়িত্ব পালন করতে দিচ্ছেন না। আমি ফ্যাসিবাদীদের কাছে ক্ষমতা ছাড়তে পারি না। যে কারণে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ও কারফিউ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
যদিও বৃহস্পতিবার ভোরেই কারফিউ তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ বলছে, রাতে জাতীয় পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক সেনা ও কনস্টেবল আহত হয়েছেন।
