বাণিজ্য ডেস্ক :
সুদীর্ঘ ২০ বছরের রেকর্ড ভাঙল মার্কিন মুদ্রা ডলার। মানের দিক থেকে সম্প্রতি ইউরোকে ছাড়িয়ে গেছে ডলার।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) মস্কো মানি এক্সচেঞ্জে ডলারের মান ছাড়িয়ে যায় ইউরোকে। এদিন প্রতি রুবলের বিপরীতে ডলারের মান ছিল ৫৮ দশমিক ৭০। অন্যদিকে রুবলের বিপরীতে ইউরোর মান দাঁড়িয়েছে ৫৮ দশমিক ৫২। স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে এমন তথ্য পাওয়া যায় বলে নিশ্চিত করে বার্তাসংস্থা আরটি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেন ইস্যুতে বড় রকমের সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে ইউরোপ। চলতি বছরে এরই মধ্যে ইউরোর মান কমেছে ১২ শতাংশ। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি এক ডলারে মিলছে এক ইউরো। বিগত বিশ বছরেও এমন চিত্র দেখেনি বিশ্ববাসী।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ‘হতাশার মধ্যে দিয়ে কাটছে ইউরোপের দিন। একদিকে গ্যাস সংকট, অন্যদিকে রুবলে মূল্য পরিশোধের চাপ। এরই মধ্যে কাঁধে চেপে বসেছে মূল্যস্ফীতির কড়াল থাবা। এতে করে কমে গেছে ইউরোর মান। অন্যদিকে শক্তিশালী মুদ্রা ব্যবস্থার দিকে আগাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ। মূল্যস্ফীতি সামলাতে দেশটি বাড়িয়ে দিয়েছে সুদের হার, পরিবর্তন আনছে প্রচলিত মুদ্রাস্ফীতিতে।’
এদিকে চলতি সপ্তাহের সোমবার (১১ জুলাই) রাশিয়া বন্ধ করে দিয়েছে ইউরোপে সবচেয়ে বড় রুশ গ্যাসের পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম-১। যদিও রাশিয়া বলছে, এটি সাময়িক সময়ের জন্য। রক্ষণাবেক্ষণ ও কিছু মেরামতজনিত কাজের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ইউরোপের কর্তাব্যক্তিদেরও জানিয়ে দেয়া হয়েছে এমনটা হতে যাচ্ছে। রুশ কর্তাব্যক্তিদের মতে, হঠাৎ করে নয়, আলোচনা সাপেক্ষেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ১১ জুলাই থেকে আগামী ১০ দিন পর্যন্ত এ পাইপলাইন হয়ে ইউরোপে সব ধরনের গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ রাখবে রাশিয়া।
বিগত বছরগুলোতে এই পাইপলাইনে সমস্যা দেখা দিলে, ইউক্রেন ও পোল্যান্ডের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া পাইপলাইন থেকে গ্যাসের জোগান দিত রাশিয়া। কিন্তু সেসব এখন পুরোনো সুখস্মৃতি। ফেব্রুয়ারির সংঘাত বদলে দিয়েছে সব হিসাবনিকাশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া এবার আর কোনো বিকল্প পথ খোলা রাখছে না। এতে ইউরোপকে গ্যাস সংকটের মুখোমুখি হতে হবে।
নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইনটির সিংহভাগ মালিকানা গ্যাজপ্রমের হাতে। তারা জানিয়েছে, এখানে লুকানোর কিছু নেই। পাইপলাইনে মেরামতজনিত কাজ করতে হবে–এটা ইউরোপের দেশগুলোকে আগে থেকেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমাদের দশা হয়েছে, ‘ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়’ এমনটা। পুতিনকে তারা এক রত্তিও বিশ্বাস করে না। হঠাৎ করে যদি নর্ড স্ট্রিম-১ থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়, তাহলে বড় রকমের সংকটের মুখোমুখি হতে হবে ইউরোপকে।
সূত্র: আরটি, এফটি
