হোম জাতীয় খাজনা আদায়ের সেই জমিদার বাড়িটি অরক্ষিত

জাতীয় ডেস্ক :

কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দিনাজপুরের বিরামপুরের রতনপুর জমিদার বাড়ি। অভিভাবকহীন দ্বিতল অট্টালিকাটিতে অনেকটা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে স্থানীয়রাই। রাতের আঁধারে সবই খুলে নিয়ে গেছে তারা। সংস্কার আর নজরদারির অভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে জমিদার বাড়িটি।

তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেয়ার আশ্বাস দেয় উপজেলা প্রশাসন।

জানা যায়, সদর থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিরামপুর উপজেলার ৩ নম্বর খাঁনপুর ইউনিয়নের রতনপুর বাজারের উত্তর পাশে অবস্থিত এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন জমিদার বংশের বাড়ি। ঊনবিংশ শতাব্দীর কিছু আগে প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করার জন্য নির্মিত হয় বাড়িটি।

ওই জমিদার বাড়ির চারদিকে এখন সুনশান নীরবতা। পাখির কিচির মিচির ডাক। মাথা উঁচু করে বীর দর্পে জমিদারিভাব নিয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে দাঁড়িয়ে আছে ভবনটি। জানালা দরজা কিছুই নেই। অষ্টাদশ শতকে ছাদে লোহার গার্ডার দিয়ে নির্মাণ করা হয় ওই ভবনটি। ভবনের দেয়ালে আগাছা, পাশ ঘেঁষে ঝোপঝাড়। দরজা, জানালা কিছুই নেই, নেই প্রবেশের বাধা।

আরও জানা গেছে, অভিভাবকহীন দ্বিতল অট্টালিকাটিতে অনেকটা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছেন স্থানীয়রাই। রাতের আঁধারে সবই খুলে নিয়ে গেছে। নিপুণ গাঁথুনির দেয়ালের ইটগুলো এখনো অনেকটা চকচকেই রয়ে গেছে। থরে থরে সাজানো দ্বিতল ভবনের ১৪টি ঘরের দেয়াল, ছাদে রয়েছে অনেক নিদর্শন। বিরামপুর উপজেলার উত্তরে ১২ কিলোমিটার দূরে খানপুরে জমিদার বাড়িসহ জমিদারের ১২০০ বিঘা জমি বনজ ফলজ ও ওষুধি বাগান রয়েছে। জমিদার বাড়ির ভবন এখন ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে রয়েছে। এখানে একটি ইসলামিক মিশন হাসপাতাল, একটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ও একটি মসজিদ রয়েছে।

তবে সংস্কার আর নজরদারির অভাবে জমিদার বাড়িটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তারপরও প্রতিদিনই এখানে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসেন পর্যটকরা।

স্থানীয়দের দাবি, সংরক্ষণ করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দিলে পর্যটক বাড়বে সেই সঙ্গে এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

এদিকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত জমিদার বাড়িটি সংস্কারের পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা জানায় স্থানীয় প্রশাসন।

বিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান খাইরুল আলম রাজু জানান, পর্যটক হিসেবে বিভিন্ন মানুষ এই জমিদার বাড়িতে আসা-যাওয়া করুক এটাই আমরা চাই। এমনটা করলে এখানে বিভিন্ন কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।

বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিমল সরকার বলেন, সংস্কারের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। এ ব্যাপারে এখনো কোনো উত্তর পাইনি। তবে প্রত্নতাত্ত্বিক ও পর্যটন দফতর যদি কিছু করতে চায়, তাহলে অবশ্যই আমরা প্রশাসনের দিক থেকে সহায়তা করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন