বিনোদন ডেস্ক :
শিশুশিল্পী হিসেবে একটি বিজ্ঞাপনে অভিনয়ের মাধ্যমে মিডিয়ায় আসেন তিনি। ছোট্ট ওই বয়সেই কাজ করেছেন অনেক ছবিতে। অভিনয় জগতে তৈরি করেছেন অসীম সম্ভাবনা। সম্প্রতি নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন তিনি।
হ্যা, বলছি প্রার্থনা ফারদিন দীঘির কথা। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সুমন ধর পরিচালিত ‘শেষ চিঠি’ ফিকশনে তুলি চরিত্রে দেখা গেছে তাকে। সময় সংবাদকে জানিয়েছেন তার অভিনয়, ক্যারিয়ারসহ বিভিন্ন বিষয়ে।
প্রশ্ন: ‘শেষ চিঠি’তে তুলি চরিত্রের সঙ্গে একেবারে মিশে যেতে দেখেছি আপনাকে। ‘তুলি’ সম্পর্কে জানতে চাই আপনার কাছে।
প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: ২০১৯ সালে সুমন ‘শেষ চিঠি’ গল্পটা সম্পর্কে বলেছিল। তখন আমার প্ল্যান ছিল না এতে অভিনয় করার। তখন সে বলেছিল, ‘শেষ চিঠি’তে এমন একজনকে লাগবে যার চেহারা শিশুর মতো কোমল, সাধারণ। ‘তুলি’ চরিত্রটি একটি প্রজাপতির মতো। তার অনেক রং, বিভন্ন সিচুয়েশনে বিভিন্ন রুপে দেখা যায় তাকে। গল্পটি শুনে আমার খুব ভালো লাগে। এর ২ বছর পর কাজটি শুরু করি আমরা।
প্রশ্ন: সংসারের টানাপোড়েনে একজন স্ত্রীর যে কষ্ট, স্যাক্রিফাইস এবং হাহাকার, তার সবটাই ফুটে উঠেছে আপনার অভিনয়ে। এ বিষয়গুলো নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলা কতটুকু চ্যালেঞ্জিং ছিল আপনার জন্য?
প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: সত্যি কথা বলতে, শুরুতে আমি অনেক নার্ভাস ছিলাম। ‘তুলি’ চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। এখনও শুরুর দিকের শটগুলো দেখে মনে হয়, আরও ভালো করতে পারতাম। তবে, আলহামদুলিল্লাহ কাজটি সবার ভালো লেগেছে, এটাই সার্থকতা। এ ক্যারেক্টারটি ফুটিয়ে তুলতে সুমন, রাজু রাজ, ইয়াসসহ সবাই আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। তাদের সহায়তা ছাড়া আমি কোনোভাবেই কাজটি করতে পারতাম না।
প্রশ্ন: বড় হওয়ার পর ‘শেষ চিঠি’ই আপনার প্রথম কাজ, যেখানে আপনি নিজের অভিনয়ের ছাপ রাখতে সক্ষম হয়েছেন। এক্ষেত্রে নিজেকে কতটুকু সফল বলে আপনি মনে করেন?
প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: ইন্ডাস্ট্রিতে এত গল্পের মধ্যে আমাদের সাধারণ একটা গল্প মানুষকে এভাবে নাড়া দেবে ভাবিনি। এ গল্পটার সঙ্গে যে মানুষ নিজেকে রিলেট করতে পারছে, সবাই দেখছে ‘শেষ চিঠি’, এখানেই আমার স্বার্থকতা। প্রতিদিন যেভাবে মানুষের রেসপন্স পাচ্ছি, তা সত্যিই অপ্রত্যাশিত ছিল আমার কাছে। তবে এখানেই শেষ না। আরও অনেক দূর যেতে হবে, ভবিষ্যতে আরও অনেক কিছু করা বাকি।
প্রশ্ন: তথাকথিত নায়িকা নাকি একজন পূর্ণাঙ্গ অভিনেত্রী, কোন দিকে আপনি মনোনিবেশ করতে চান?
প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: অভিনেত্রীর চেয়ে নায়িকা হওয়া সহজ। নায়িকা তো হয়েই গেছি। মানুষের কাছে নায়িকা তকমা পেয়ে গেছি। তবে নায়িকা নয়, অভিনেত্রী হতে চাই। কিন্তু অভিনেত্রী তকমা লাগতে অনেক সময় লাগে। হয়তো বা ১০ বছরও লাগতে পারে। কিন্তু আমি অপেক্ষা করবো। আমি আগে অভিনেত্রী হতে চাই।
প্রশ্ন: গ্রামীণফোনের বিজ্ঞাপন থেকে ‘শেষ চিঠি’, যাত্রাটা কেমন?
প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: যাত্রাটা মসৃণ ছিল না। একটা সময় পর্যন্ত অনেক মসৃণ ছিল, একটা সময় অনেক চরাই উৎরাই পার করতে হয়েছে। অনেক মানসিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এখনও অনেক স্ট্রাগল করতে হচ্ছে। তবে, সব মিলিয়ে জার্নিটা অনেক সহজ না হলেও বেশ সুন্দর ছিল।
প্রশ্ন: দর্শকদের জন্য সামনে আপনার কি চমক থাকছে?
প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: এগুলো চমকই থাকুক। এক এক করে পরে বলে দেব। দর্শকদের আরও এরকম কাজ উপহার দেওয়ার ইচ্ছা আছে। ইনশাআল্লাহ, হয়তোবা সামনে এমন আরও আসবে।
প্রশ্ন: ‘শেষ চিঠি’র স্মরণীয় স্মৃতি কোনটি?
প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: ‘শেষ চিঠি’র শেষ দৃশ্যেটি অনেক ইমোশনাল। ছেলেটি এবং মেয়েটি মারা যায়। সেদিন আমরা সারারাত শুটিং করেছি। ওই সময়টাতে আমার অন্য একটি কাজের ট্রেলার রিলিজ পায়, যেটি নিয়ে আমি একটু চিন্তিত ছিলাম। এছাড়াও সেদিন পার্সোনাল কিছু কারণে আমার মন খারাপ ছিল, কান্নাকাটি করেছিলাম খুব। তবে এই মানসিক অবস্থাটা দরকার ছিল ‘শেষ চিঠি’র শেষদিকের ইমোশনাল শটের জন্য। সারারাত শুটিং করে অবশেষে সকালে নরমাল হয়েছি, এরপর আমরা সবাই একসাথে নাস্তা করি। সব মিলিয়ে ওই দিনটা খুব স্মরণীয় আমার কাছে।