আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ইসরাইল সফর করছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসগলু। গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম কোনো তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ইসরাইল সফর এটা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রমশ উন্নত হচ্ছে ইসরাইল ও তুরস্কের মধ্যেকার সম্পর্ক।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান একসময় ইসরাইলবিরোধী মনোভাব দেখালেও এখন দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি। সবশেষ তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ইসরাইল সফর দুই দেশের সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ার বার্তাই দিচ্ছে।
মূলত ২০০০ সালের পর থেকে তুরস্ক ও ইসরাইলের মধ্যকার সম্পর্ক তিক্ত হতে শুরু করে। ইসরাইলের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল ও অবৈধ বসতি নির্মাণ নিয়ে সোচ্চার হয় এরদোগান সরকার। শুধু তাই ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ও আঞ্চলিক অন্যান্য ইস্যুতে সমর্থন জানায় আঙ্কারা।
২০১০ সালে ফিলিস্তিনের গাজায় পাঠানো জরুরি ত্রাণবাহী তুর্কি জাহাজে নির্বিচারে মিসাইল হামলা চালায় ইসরাইল। ওই হামলায় জাহাজের ১০ স্বেচ্ছাসেবী নিহত হয়। এর ফলে তেল আবিব-আঙ্কারা সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে। এরপর ২০১৮ সালে দেশ দুটির সরকার তাদের নিজ নিজ রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে।
এ ছাড়া মিসরে ২০১৩ সালের সামরিক অভ্যুত্থান, ২০১৫ সালের ইরান পরমাণু চুক্তি, ২০১৯ সালে সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার ও তুর্কি সামরিক অভিযানের মতো আঞ্চলিক ইস্যুগুলোতে দেশ দুটির নেতাদের মতনৈক্য রয়েছে।
কিন্তু এ বিষয়গুলো এড়িয়ে সম্প্রতি ইসরাইল ও তুরস্ক উভয় পক্ষই নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। যা আঙ্কারার পররাষ্ট্রনীতির একটু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন বলে মনে করা হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাভুসগলুর তেল আবিব সফর সেই পরিবর্তনের অংশ।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, দুই দিনের সফরে মঙ্গলবার (২৪ মে) ইসরাইলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে অবতরণ করেন চাভুসগলু। এটা প্রধানত ইসরাইল সফর হলেও এদিন প্রথমেই অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর সফরে যান তিনি। সেখানে ফিলিস্তিনি (পিএ) প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকির সঙ্গে সাক্ষাৎকার করেন।
ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকের পর কাভুসগলু বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হলেও ফিলিস্তিনিদের প্রতি তুরস্কের সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
আল জাজিরা জানায়, সফরের দ্বিতীয় দিন জেরুজালেমে ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাপিদ বলেন, তুরস্ক-ইসরাইল সম্পর্কে এক ‘নতুন অধ্যায়’র সূচিত হলো। তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইসরাইল ও তুরস্কের মধ্যকার সম্পর্ক ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনি উভয়ের জন্যই শান্তি বয়ে আনবে।
এর আগে গত মার্চ মাসে তুরস্ক সফরে গিয়েছিলেন ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ। তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয় তুরস্ক। বাজানো হয় ইসরাইলের জাতীয় সঙ্গীতও।