আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
পূর্ব-ইউক্রেনের বন্দরনগরী মারিওপোলের আজভস্তাল ইস্পাত কারখানা ও এর আশপাশের এলাকায় তিন দিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার (০৫ মে) সকাল থেকে এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে; চলবে আগামী রোববার (০৭ মে) পর্যন্ত। কারখানায় আটকে বেসামরিক নাগরিকেরা যাতে নিরাপদে বের হয়ে যেতে পারে সেজন্য বুধবার এ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে মস্কো।
এদিকে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর লুহানস্কে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে অন্তত ৫ বেসামরিক নাগরিক নিহতের খবর জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। ওদিকে, মস্কোর ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিতে জি সেভেনভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
অন্যদিকে ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভের ম্যাক্সিম গোর্কি বিনোদন পার্ক টার্গেট করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। স্থানীয় সময় বুধবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। কেউ হতাহত না হলেও ওই হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় পুরো পার্কটি।
বন্দরনগরী মারিওপোলের বেশিরভাগ অঞ্চল দখল করে নিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। অবশিষ্ট ইউক্রেনীয় সেনারা আজভস্তাল ইস্পাত কারখানার ভেতরে অবস্থান নিয়েছে। এখানে শহরের বেশ কিছু বেসামরিক নাগরিকও আশ্রয় নিয়েছে।
ইউক্রেনের দাবি, কারখানায় হামলা অব্যাহত রেখেছে রুশ সেনারা। বুধবার (০৪ মে) শহরটির মেয়র জানান, ইস্পাত কারখানার বাঙ্কারে অবস্থান নেওয়া ইউক্রেনীয় সেনাদের সঙ্গে সব যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী বলেছে, আজভস্তাল ইস্পাত কারখানায় ঢুকে পড়েছে রুশ সেনারা। কারখানা ধ্বংস করার চেষ্টা করছে তারা। এই মুহূর্তে উভয় পক্ষের মধ্যে ‘রক্তক্ষয়ী লড়াই’ চলছে।
তবে আজভস্তাল কারখানায় হামলা চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছে মস্কো। এখানে আটকে পড়া বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে সরে যেতে ৩ দিনের অস্ত্রবিরতির ঘোষণা করেছে রাশিয়া। ক্রেমলিনের তরফ থেকে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (০৫ মে) সকাল থেকে অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়েছে। চলবে রোববার (০৭ মে) পর্যন্ত।
এদিকে এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, বুধবার মারিওপোল থেকে ৩ শতাধিক বেসামরিক নাগরিককে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাকিদের সরিয়ে নিতে যুদ্ধবিরতির সময়সীমা আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আজ (০৪ মে) মারিউপোল ও এর আশপাশের এলাকা থেকে ৩৪৪ জনকে নিরাপদে বের করে আনতে সক্ষম হয়েছি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এলাকাটি থেকে আরো মানুষকে বের করতে পারব বলে বিশ্বাস করি। তবে এতে অনেক ঝুঁকি রয়েছে। সবাইকে নিরাপদে বের করতে হলে অস্ত্রবিরতির কোনো বিকল্প নেই।’
দেশজুড়ে রাশিয়া অভিযান অব্যাহত রাখলেও, কিয়েভের দাবি, পুতিন বাহিনীকে ঠেকাতে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ইউক্রেনের সেনারা। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার দোনেৎস্কের রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত এলাকায় একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইউক্রেন। এতে একটি তেলের ডিপো ধ্বংস হয়ে যায়।
এদিকে হোয়াইট হাউস মুখপাত্র জেন সাকি বলেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার পরাজয় হয়েছে। যে উদ্দেশে মস্কো প্রতিবেশী দেশটিতে সেনা অভিযান চালিয়েছিল তা সফল হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
মস্কোর ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিতে জি সেভেনভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার (০৪ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন জানান, নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে শিগগিরই জোটের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি।