হোম ফিচার অর্ধশত গ্রাহকের সঞ্চিত ৮৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সখিপুর বাজার মুদি সমিতি’র হোতাদের বিরুদ্ধে

দেবহাটা প্রতিনিধি :

দেবহাটার সখিপুর বাজারের অর্ধশতাধিক মুদি দোকানীর ছয় বছরের সঞ্চিত ৮৫ লাখ ৪০ হাজার ৬৬৭ টাকা যোগসাজোসে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পরিচালিত সখিপুর-পারুলিয়া বাজার মুদি সমিতির চারজন হোতা’র বিরুদ্ধে।

অভিযুক্তরা হলেন, সখিপুর পারুলিয়া বাজার মুদি সমিতির সভাপতি উত্তর সখিপুরের মানিক গাজীর ছেলে আনসার আলী, সাধারণ সম্পাদক মাঝ পারুলিয়ার মৃত ধীরেন গাজির ছেলে মতিয়ার রহমান, দপ্তর সম্পাদক ধোপাডাঙ্গা গ্রামের অমেদ আলীর ছেলে পিয়ার আলী ওরফে পিরুল ও ক্যাশিয়ার মৃত রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাসের ছেলে সুধীর বিশ্বাস ওরফে ধোনা।

এঘটনায় বৃহষ্পতিবার ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের পক্ষে সখিপুর বাজারের মুদি দোকানী ও খেজুরবাড়িয়া গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে আনারুল ইসলাম বাদি হয়ে অভিযুক্ত চার পান্ডবের বিরুদ্ধে দেবহাটা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আনারুল ইসলামসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, সমবায়-সমাজসেবা বা অন্য কোন সরকারি দপ্তরের অনুমতি কিংবা লাইসেন্স ছাড়াই ২০১৩ সালে অভিযুক্ত ব্যাক্তিরা সখিপুর-পারুলিয়া বাজার মুদি সমিতি নামের একটি ঋনদান ও সঞ্চয়ী সমিতি খুলে বসেন। তাদের মধ্যে নিজেরাই নিজেদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আনসার আলী সমিতির সভাপতি, মতিয়ার রহমান সাধারণ সম্পাদক, পিয়ার আলী ওরফে পিরুল দপ্তর সম্পাদক এবং সুধীর বিশ্বাস ওরফে ধোনা ক্যাশিয়ার হিসেবে সমিতির চেয়ারে বসে পড়েন। তারা একে একে অতি লাভের আশ্বাস দিয়ে সখিপুর বাজারের প্রায় অর্ধশতাধিক মুদি দোকানদারকে সমিতির সদস্য বানিয়ে নেন।

প্রথম দিকে ক্ষুদ্র ঋন দিয়ে ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস যুগিয়ে পরবর্তীতে লাভজনক ৬বছর মেয়াদি একটি স্কিম দেখিয়ে দৈনিক হারে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সঞ্চয় আদায় করতে থাকেন। একপর্যায়ে ব্যবসায়ীদের সঞ্চয়ের টাকায় সমিতির কোষাগার ফুলে ফেঁপে উঠলে সমিতির পাশাপাশি গ্রাহকদের টাকায় ব্যাক্তিগত ভিত্তিতে চড়া সুদের কারবার খুলে বসেন অভিযুক্তরা।

গেল ২০১৯ সালে চুক্তি মোতাবেক সমিতির ৬বছর মেয়াদি ওই সঞ্চয়ী স্কিমটির মেয়াদ পরিপূর্ণ হলে লভ্যংশ সহ গ্রাহকদের টাকা ফেরত না দিয়ে তালবাহানা শুরু করেন অভিযুক্তরা। একপর্যায়ে গ্রাহকদের চাপাচাপিতে সমিতির হিসাবে বসেন অভিযুক্তরা। চুড়ান্ত হিসাবে দেখা যায়, সমিতির কাছে অর্ধশতাধিক মুদি দোকানী গ্রাহকের ৬ বছরে মোট সঞ্চিত ৮৫ লাখ ৪০ হাজার ৬৬৭ টাকা পাওনা রয়েছে। এরপর থেকে গত দুবছর ধরে গ্রাহকদের সঞ্চিত টাকা ফেরত না দিয়ে একের পর এক তালবাহানা করে আসছে অভিযুক্তরা।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা আরও জানান, ৬বছর ধরে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তাদের সঞ্চয়ের প্রায় ৮৬ লাখ টাকা যোগসাজোসে আত্মসাত করেছেন সখিপুর বাজার মুদি সমিতির সভাপতি মতিয়ার রহমান সাধারণ সম্পাদক, পিয়ার আলী ওরফে পিরুল দপ্তর সম্পাদক এবং সুধীর বিশ্বাস ওরফে ধোনা। সর্বশেষ এসব অভিযুক্তদের তালবাহানায় অতিষ্ট হয়ে থানা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনসহ সঞ্চিত টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সখিপুর বাজারের মুদি ব্যবসায়ীরা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন