হোম জাতীয় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বউয়ের আবেদন আপিলে খারিজ

জাতীয় ডেস্ক :

শিশুকন্যাকে নিজের জিম্মায় চেয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমের ছেলে মুশফেক আলম সৈকতের স্ত্রীর করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে এই মামলা বিচারিক আদালতকে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ সোমবার (৪ এপ্রিল) এই আদেশ দেন। এ ছাড়া শিশুকন্যাকে মায়ের কাছে সপ্তাহে তিন দিন এবং বাবার কাছে চার দিন রাখার আদেশও বহাল রাখেন আদালত।

এদিন আদালতে মায়ের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আহসানুল করিম। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম ও সাবরিনা জেরিন। অন্যদিকে, বাবার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মেহেদী হাছান চৌধুরী।

শুনানিতে মেহেদী হাছান বলেন, ২০ মাসের শিশুকে বাবাসহ মালয়েশিয়া থেকে দেশে পাঠিয়ে দেন মা। আবার দেশে এসে পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। এ সময় আদালত বলেন, ‘এভাবে বলবেন না। মা, মা-ই।’

পরে আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাঁচ বছরের মেয়েকে দেশের বাইরে না নিতে বাবা মুসফেক আলমের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং মায়ের জিম্মায় চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন মা। আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। পরে রুলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে হাইকোর্ট বাবার কাছে চার দিন এবং মায়ের কাছে তিন দিন থাকবে–এমন রায় দিয়েছিলেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে মায়ের পক্ষে আপিল করা হয়। আমাদের যুক্তি ছিল, আইনানুযায়ী মা পুরোপুরি সন্তানকে কাছে পাবে। আপিল বিভাগ উভয় পক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে ছয় মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতকে মূল মামলাটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। এ সময় শিশুটি হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বাবা ও মায়ের কাছে থাকবে।’

শিশুটির মা তাসনুভা ইকবাল রাজধানীর গুলশানের বাসিন্দা ইকবাল কামাল ও নাজমা সুলতানার মেয়ে। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষক। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২০ অক্টোবর তিনি ড. শামসুল আলমের ছেলে মুশফেক আলম সৈকতকে বিয়ে করেন। পরের বছরের ১৮ ডিসেম্বর একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তাসনুভা ইকবাল। পরে তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বনিবনা না হওয়ায় তাসনুভা আদালতেরও দ্বারস্থ হন।

এরপর গত বছরের ৩ জানুয়ারি তাসনুভাকে ডিভোর্স নোটিশ দেন সৈকত। এ অবস্থায় বাবার কাছে থাকা মেয়েকে দেখতে চেয়ে নিম্ন আদালতে মামলা করেন তাসনুভা। আদালত ভার্চুয়ালি দেখার কথা বলেছিলেন। কিন্তু মা তাসনুভা শিশুকে নিজের জিম্মায় নিতে চান। পরে গত বছরের ২০ অক্টোবর কন্যাসন্তানকে নিজের জিম্মায় নিতে হাইকোর্টে আবেদন করেন তাসনুভা।

গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পারিবারিক আদালতে থাকা মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে মায়ের কাছে তিন দিন রাখার আদেশ দেন। এ ছাড়া শিশুটিকে আদালতের অনুমতি ছাড়া বিদেশ নিতে পারবে না বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। এরপর হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন শিশুটির মা।

 

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন