মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
‘দাদা আমি আছি। প্রতি উত্তরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য বলেন, কিরে সাগর তুই চলে আইছিস।’
লেখক তখন ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে বাড়ির ছাদের ওপর আসেন। তাদের কথোপকথনে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শত শত নেতাকর্মী হতবাক হয়ে যান। সারাগায়ে ধুলাবালি মাখানো শারীরিক প্রতিবন্ধী এই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলায় সবার নজর পড়ে সেদিকে। এ সময় উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরাও আগ্রহ নিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী এই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এক পর্যায় গণমাধ্যমকর্মীরা তার সঙ্গে কথা বলেন। তার নাম সাগর হোসেন। গ্রামের বাড়ি খুলনা শহরের সোনাডাঙ্গা মডেল থানায়। সে শাহজালালের ছেলে। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘লেখক দাদা যেখানে যায় আমি সেখানেই যাব। আমাকে কোনোভাবেই নিবৃত করতে পারেন না। আমি পঙ্গু বিধায় দাদা আমাকে ঢাকার বাইরে যেতে নিষেধ করলেও আমি শুনি না। তাইতো লেখক দাদা মণিরামপুরে আসার খবর পেয়ে আমি ওই রাতেই চলে এসেছি।’
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য শুক্রবার সন্ধ্যায় যশোরের মণিরামপুর উপজেলার বাহিরঘরিয়া গ্রামের বাড়িতে আসেন। সঙ্গে রয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। এছাড়াও সঙ্গে আসেন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
শনিবার সকালে লেখক ভট্টাচার্য্যরে বাড়িতে গিয়ে সাগর হোসেনের সঙ্গে দেখা হলে তিনি আরও বলেন, সে ২০০৩ সালে ঢাকায় গিয়ে বাসের হেল্পারের কাজ নেন। ২০০৮ সালে বাস দুর্ঘটনায় তার দুই পা অকেজো হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করতে করতে ২০১৬ সালের কোনো একদিন সেখানে দাদার (লেখক ভট্টাচার্য্য) সঙ্গে পরিচয় হয়। তার বাড়ি খুলনা হওয়ায় দাদা তাকে আলাদা নজরে নেন। এরপর থেকে লেখক দাদা তাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতাসহ পরিবারের খোঁজখবর নেন।
তার দুই ছেলেমেয়ের লেখাপড়া ও পরিবারের দেখভাল করেন দাদা লেখক। দাদাকে ছাড়া তিনি থাকতে পারেন না। তাই দাদা ঢাকার বাইরে গেলে তিনিও সেখানে চলে যান। কিছুদিন আগে দাদা বরিশালে গেলে সোহাগ লঞ্চে করে সেখানে চলে যান। কয়েকদিন আগে টাঙ্গাইলে গেলে সোহাগ মোটরসাইকেলে ভাড়া করে টাঙ্গাইলে চলে যান। এভাবে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত দাদার সঙ্গে থাকতে চান সাগর।