মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকার মোবারকপুর গ্রামের খান পাড়ায় জনমনে এ আতংক বিরাজ করছে। গ্রামে গত এক সপ্তায় ৬ বাড়িতে ৮ বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তবে আগুনে হতাহতের ঘটনা না ঘটেনি। আবার আগুন লাগার নেপথ্যে কারও সম্পৃক্তার প্রমান মেলেনি। যে কারনে আগুন লাগার ঘটনাকে অনেকেই অলৌকিক বলে দেখছেন।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার ২০ জানুয়ারী সকাল থেকে দুপুর অবধি গ্রামের ৪ বাড়ির বিচালী, পাটখড়ি ও খড়ের গাদায় আগুন লাগে। এভাবে গত ৫ দিনে আরও ৪ বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। আগুন লাগলেও বড় আকারের কোন দূর্ঘটনা ঘটেনি বলে জানা গেছে। একের পর এক আগুন লাগার ঘটনায় এলাকায় রীতিমত নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আগুন লাগার পিছনে কারোর কোন হাত নেই, তাই এটিকে স্থানীয় অনেকেই অলৌকিক ঘটনা বলে সকলেই মন্তব্য করছেন।
গত ১৮ জানুয়ারী সকাল ১০.১০ মিনিটের দিকে আজিজুর খানের বাড়ির পাটকাটির গাদায় আগুন লাগে, একই দিন বেলা ১১ টার দিকে ঈমাম আরশাফ
খানের বাড়ির পাটকাটির গাদায় আগুন লাগে , একই দিনে বিকেল ২.৩০ মিনিটে মোজহার সরদারের বাড়ির বিচালি গাদায় দিকে আগুন লাগে এবং বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আনিছুর রহমানের কাঠের গাদায় আগুন লাগে, ১৯ জানুয়ারী দুপুর ২ টার দিকে সাবেক মেম্বর আমজাদ আলী খানের বাড়ির বিচালি গাদায়, ১৮ জানুয়ারী মাগরিবের সময় আনিছুর খানের ঘরের ভিতরে কাঠের গাদায়, ১৬ জানুয়ারী মাগরিবের সময় আজিজুর রহমানের বাড়ির কাঠের গাদায়, ১৫ জানুয়ারী মাগরিবের সময় রমজান আলী খান সবুজের বাড়ির কাঠ ও বিচালি গাদায় আগুন লাগে।
এদিকে একাধিকবার আগুন লাগার ঘটনায় গ্রামবারি মধ্যে আগুন আতংক বিরাজ করছে। এ বিষয় রিয়াদ ভুক্তভোগী রিয়াদ খান বলেন, বাড়িতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ পাটখড়ির গাদা দাও দাও করে আগুন জ্বলছে। পানি দিয়ে নিভানোর আগেই পুড়ে গেছে।
ঈমাম আশরাফের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, পাশের বাড়ির পাটকাটির গাদায় আগুন লাগা দেখে আমার স্ত্রী ঘরের ছাদের উপর থেকে নিচে এনে গাদা দেয়। কিছক্ষণের মধ্যে তার পাটখড়ির গাদায় আগুন লাগে।
কথা হয় মুজারের স্ত্রীর সাথে তিনি বলেন, তার বউমা বাড়িতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ করে বিচালি গাদায় দাও দাও করে জ্বলে ওঠে। পাশের লোকজন এসে আগুন নেভায়। আগুন আতংকে আতংকিত গ্রামের অনেকেই বলছেন, তাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।
স্থানীয় অনেকেই বলেন, এ পাড়ায় প্রায় শতবর্ষী শমসের আলী খান নামের এক ব্যক্তি ৯ মাস পূর্বে মারা যান। তিনি আল্লাহ ওয়ালা ফরেজগার ব্যক্তি ছিলেন। মারা যাওয়ার আগে তিনি যে ঘরে থাকতেন, সেই ঘরের টিন তার (মৃত. শমছের আলী খান) এক ছেলে খুলে ফেলেন। এরপর থকেই ওই পাড়ার একাধিক বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটতে শুরু করে। যা অব্যাহত রয়েছে।
গ্রামবাসী আগুন থেকে পরিত্রান পেতে কবিরাজের শরনাপন্ন হচ্ছেন। তারপরও কোন কুল কিনারা করতে পারছেন না। এ নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে আগুন আতংক বিরাজ করছে।