অনলাইন ডেস্ক :
বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন ৯৫ বছরের বৃদ্ধা ইশারন নেছা। পায়ে আঘাত পাওয়ায় হাঁটাচলাও করতে না পারায় ভিক্ষা করতে পারতেন না। তাই অসহায় এই মায়ের দেখাশোনার দায়িত্ব বেশিদিন নেননি সন্তানরা। তাকে রেখে যান ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায়। খবর পেয়ে সেই বৃদ্ধার পাশে দাঁড়িয়েছেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাবিনা ইয়াসমিন। বৃহস্পতিবার (৭ মে) স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় ওই বৃদ্ধাকে তার সেজ মেয়ে আজিমা খাতুনের বাড়ি পাখোরতলা গ্রামে থাকার ব্যবস্থা করেছেন।
শনিবার (৯ মে) ডিসি সাবিনা ইয়াসমিন ওই বৃদ্ধাকে দেখতে যান। তিনি তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বিশেষ উপহার সামগ্রী হিসেবে চাল, ডাল, তেল, নুডুলসসহ শুকনো খাবার, একটি স্থায়ী ঘরের জন্য ঢেউটিন ও নগদ ২০ হাজার টাকা তুলে দেন। জেলা প্রশাসক তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন এবং আঘাত পাওয়া পায়ের উন্নত চিকিৎসার আশ্বাস দেন।
জানা গেছে, ইশারন নেছার স্বামী মজত আলী মারা যান মুক্তিযুদ্ধের পরপরই। ৫ মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে মারা গেছেন। বাকি ৪ মেয়ে বিয়ে দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। ৩ মেয়ে স্বামীর বাড়ি মির্জাপুর ইউনিয়নেই। স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি স্বামীর ভিটায় থাকতেন। সৎ ছেলেদের একজন তাকে দেখভাল করতেন। সেই সন্তান মারা গেলে সবকিছু বিক্রি করে একই ইউনিয়নের পাখোরতলা এলাকায় সেজ মেয়ে আজিমা বেগমের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। ১৫-১৬ বছর ধরে সেখানে থেকেই ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। মাসখানেক আগে এক মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পিছলে পড়ে পায়ে আঘাত পান তিনি। তারপর থেকে আর হাঁটতে পারেন না। এই অবস্থায় মাকে টানতে না পেরে মেয়ে আজিমা তাকে রেখে আসে সৎ ভাই জাহিরুলের বাড়িতে। একমাস যেত না যেতেই তারা আবার ইশারন নেছাকে রেখে আসেন আজিমার বাড়িতে। কয়েকদিন পর আজিমা আবার রেখে আসে জাহিরুলের বাড়ি।