মোংলা প্রতিনিধি :
মেয়াদোওীর্ন মরিচা ধরা রড দিয়ে গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। বাগেরহাটের মোংলায় সুন্দরবন ইউনিয়নে পাখিমারা খালের ওপর নির্মিত হচ্ছে এই ব্রিজ। পটুয়াখালীর পৌরসভার মেয়র মোঃ মহিউদ্দিনের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ এই ব্রিজের ঠিকাদার বলে জানায়
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার গোপাল মন্ডল।
২০১৮ সালের ১৩ জুন টেন্ডারের মাধ্যমে ৯০ মিটার এই গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) বিভাগের কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ করার কথা ছিল নির্মাণ কাজ। কিন্তু তিন বছরেও তা শেষ হয়নি।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সরেজমিনে সুন্দরবন ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গা ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে বাশতলা বাজারের পাখিমারা খাল পার হচ্ছেন এলাকাবাসী। পাশেই এই খালের ওপরে ব্রিজের গার্ডার বসানোসহ নির্মিত হচ্ছে ব্রিজ। প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ব্রিজের কাজে ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী বালুসহ অন্যান্য মালামালের সাথে সেখানে স্তুপ করে রাখা হয়েছে কয়েক টন মরিচা ধরা রডও।
অভিযোগ ওঠে এই রড দিয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এনিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। মরিচা ধরা রড দিয়ে ব্রিজ তৈরী হলে কতদিন টিকবে প্রশ্ন রেখে স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মাসুদ শেখ, মাসুদ হাওলাদার ও শেখ আসাদুজ্জামান হাওলাদার বলেন, “এখানে যে রড আনা হয়েছে মরিচা ধরা পুরানো এবং নিন্মমানের। এই রড দিয়ে ব্রিজের কাজ হলে খুব শিগগিরই ভেঙ্গে যাবে। যেহেতু এই রডের টেম্পার নাই। এই ব্রিজ আমাদের সম্পদ, এই রড দিয়ে যেন কাজ না হয় সে ব্যাপারে এই প্রতিবেককে দৃষ্টি রাখতে বলেন তারা”।
এব্যাপারে ঠিকাদরি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আবুল কালাম আজাদ এন্টারপ্রাইজের মালিক আবুল কালাম আজাদের সাথে চেষ্টা করেও বক্তব্য জানা যায়নি। তবে কথা বলেন তার ম্যানেজ গোপাল মন্ডল। গোপালের দাবি, “মরিচা ধরা এই রড ব্রিজের কাজে ব্যবহার হবেনা। আমাদের অন্য সাইডে ছিল সেখান থেকে জায়গার অভাবে এখানে এনে রাখা হয়েছে। এনিয়ে আবার নিউজ করবেন না প্লিজ”।
সুন্দরবন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারদার বলেন, মরিচা ধরা রড দিয়ে ব্রিজ করা হবে জানতে পেরে আমি ঠিকাদারের লোকজনকে দ্রুত এই রড এখান থেকে সরিয়ে ফেলতে বলি। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত দাবি অনুযায়ী জনগুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজ নির্মান হচ্ছে- জানিয়ে চেয়ারম্যান ইকরাম আরও বলেন, শুধু এ ইউনিয়ন নয় পাশর্বর্তী আরও দুটি ইউনিয়নের প্রায় শোয়া লাখ মানুষ এই ব্রিজটি ব্যবহার করবে। তাই এ ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম যাতে না হয় সে জন্য নজর রাখছি।
এ প্রসঙ্গে এলজিইডি বিভাগের মোংলা উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলিমুজ্জামান বলেন-“এমনটা হওয়ার কথা না, তারপরও যদি এমনটা হয় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব”।