হোম জাতীয় করোনার দুই মাসে ৪৬ খুন

করোনার দুই মাসে ৪৬ খুন

কর্তৃক
০ মন্তব্য 80 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক :
মানুষ যখন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ছোবল থেকে বাঁচতে দিশেহারা, এরমধ্যেও থেমে নেই ময়মনসিংহে খুনের ঘটনা। জেলায় গেল মার্চ ও এপ্রিল মাসে ২১টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। মার্চ মাসে সাত খুনের দ্বিগুণ ঘটনা ঘটেছে এপ্রিলে, এ মাসে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ১৪টি। এরমধ্যে তারাকান্দা উপজেলায় খুন হয়েছে পাঁচ জন। আর ময়মনসিংহ বিভাগে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দুইমাসে ৪৬টি। এসব খুনের পেছনে রয়েছে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ, পারিবারিক দ্বন্দ্ব, তুচ্ছ ঘটনা, পূর্ব শত্রুতা ও ব্যবসায়ীক বিরোধ। এই নিয়ে চিন্তিত জেলা মানবাধিকার নেতারা।

ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের তথ্য মতে, ময়মনসিংহ বিভাগে গত দুই মাসে ৪৬টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। ময়মনসিংহ জেলায় মার্চ মাসে খুন হয়েছে সাত জন, এপ্রিল মাসে বেড়ে ১৪ জন। জামালপুর জেলায় মার্চ মাসে ছয় জন, এপ্রিলে পাঁচ জন। নেত্রকোনা জেলায় মার্চ মাসে চার জন, এপ্রিলে তিন জন এবং শেরপুর জেলায় মার্চ মাসে চার জন, এপ্রিলে খুন হয়েছে তিন জন। এই হিসেবে রেঞ্জের চার জেলায় মার্চ মাসে ২১ জন খুন হলেও এপ্রিলে বেড়ে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ জনে।

ময়মনসিংহ জেলায় এপ্রিল মাসে সম্পত্তির বিরোধ নিয়ে এক জন করে খুন হয়েছে তারাকান্দা ও ত্রিশাল উপজেলায়। পারিবারিক বিরোধে নিয়ে এক জন করে খুন হয়েছে গফরগাঁও, ফুলবাড়িয়া ও ফুলপুর উপজেলায়। ফসল নষ্ট করার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারাকান্দা উপজেলায় খুন হয়েছে এক জন। ব্যবসায়ীক বিরোধে মুক্তাগাছা উপজেলায় খুন হয়েছেন এক ব্যবসায়ী। গভীর নলকূপের শেয়ারের মালিকানার বিরোধে ফুলবাড়িয়া উপজেলায় খুন হয়েছে দুই জন। তারাকান্দা উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে খুন হয়েছে একজন। খেলাকে কেন্দ্র করে তুচ্ছ ঘটনায় খুন হয়েছে আরও দুই জন। এছাড়া অজ্ঞাত কারণে হালুয়ঘাটে খুন হয়েছে একজন। এই হিসেবে এপ্রিল মাসে ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলায় সর্বোচ্চ খুন হয়েছে পাঁচ জন।

এপ্রিল মাসে উপজেলায় সর্বোচ্চ খুনের ঘটনাকে স্বীকার করে তারাকান্দা থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, এসব খুনের মামলার এজাহারনামীয় ৩৯ জন আসামির মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা চলছে জানান ওসি খায়ের।

এদিকে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউনের মধ্যে মানুষ ঘরবন্দি হয়ে ধৈর্যশক্তি হারিয়ে ফেলছে। এসময়ে অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং উত্তেজিত হয়ে তুচ্ছ ঘটনায় বিরোধে জড়াচ্ছে, ফলে এই খুনের ঘটনাগুলো ঘটেছে। এপ্রিল মাসের সবগুলো খুনের ঘটনায় একেবারেই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে। খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর আছে।’

জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এএইচএম খালেকুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতিতে খুনের ঘটনা বেড়ে যাওয়াটা সম্পূর্ণভাইে অপ্রত্যাশিত। সামাজিক অবক্ষয়ের কারণেই বর্তমান সমাজে মানুষের মাঝে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুনের মতো ঘটনা ঘটছে এটা সমাজের সাধারণ মানুষের জন্য চিন্তার বিষয়।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন