জাতীয় ডেস্ক :
চিত্রকর্মে হাতেখড়ি নেই ধ্রুব’র। তবে দেবী দুর্গা ফুটে উঠেছে তার চিত্রে। টুকটাক চিত্রকর্ম জানা নির্জনের। তবে দুর্গা মাকে যেভাবে সে ফুটিয়ে তুলেছে সেটা অবাক করার মতোই। ধ্রুব ও নির্জনের শিল্পকর্মে যেন পূজার ভিন্ন স্বাদ।
ধ্রুব বণিক ষষ্ঠ শ্রেণিতে আর নির্জন পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে। সম্পর্কে তারা চাচাতো ভাই। নিজের বাড়িতেই তারা গড়ে তুলেছে ছোট্ট কাগুজে মণ্ডপ। সেখানেই এঁকে ‘গড়া’ দুর্গা প্রতিমায় খেলার ছলে পূজা দিচ্ছে নিয়মিত। বাড়ির লোকজনও বিষয়টি বেশ উপভোগ করছে।
মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর এলাকার সড়ক বাজারে ধ্রুব ও নির্জনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পূজোর ভিন্ন আমেজ। দু’জনের ঘরে আলাদা করে রাখা হয়েছে বানানো মণ্ডপ ও প্রতিমা। মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা দর্শন করে এসেই নিজেদের বানানো প্রতিমায় পূজার প্রস্তুতি তাদের। সে কি আনন্দ নিজেদের মণ্ডপকে ঘিরে। জানতে চাইতেই দু’জনের মুখে রাজ্যের হাসি।
দু’জনে কাগজে এঁকেছে দুর্গা প্রতিমা। কাগজ দিয়েই তৈরি করেছে মণ্ডপ। অন্যসব মণ্ডপের মতোই নানা ডিজাইনের ভিতর দিয়ে সেখানে প্রবেশের ব্যবস্থা চিহ্নিত করা আছে।
ধ্রুব’র মণ্ডপের নাম দেওয়া হয়েছে চন্দ্রপুর দুর্গাপূজা, নির্জনের মণ্ডপের নাম দেওয়া হয়েছে শান্তিপুর দুর্গাপূজা। আগতদের স্বাগত জানিয়ে মণ্ডপের প্রবেশমুখে শারদীয় শুভেচ্ছা লেখা আছে।
ধ্রুব’র বাবা স্বদীপ বণিক প্রয়াত। তার মা শিউলী বনিক জানালেন, পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে ধ্রুব এগুলো এঁকেছে। চিত্রকর্মে কোনো ধরণের হাতেখড়ি না থাকলেও ছোটবেলা থেকেই এসবের প্রতি তার আগ্রহ। কয়েকদিন আগে সে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি আঁকলে সবাই অবাক হয়। পূজার এ মণ্ডপ আঁকা দেখেও সবাই অবাক।
নির্জনের বাবা সাংবাদিক জুটন বনিক ও মা ফাল্গুনি বনিক বলেন, ‘তারা দুই ভাই মিলে মণ্ডপের যে কাজগুলো করেছে তাতে তারা সবাই মুগ্ধ। ষষ্ঠীর দিন থেকেই তারা সেখানে খেলার ছলে পূজা দিচ্ছে। বিষয়টি বাড়ির সবাই উপভোগ করছে।
তাদের পিসি প্রভাতী বনিক দীপা বলেন, ‘পূজার প্রায় ১০-১৫ দিন আগে থেকেই তারা এ কাজে হাত দেয়। নাওয়া-খাওয়া ভুলে তাদের দিনভর পরিকল্পনা ছিল পূজার মণ্ডপ আর প্রতিমা বানানো নিয়েই। তাদের কাজগুলো দেখতে খুবই সুন্দর। একেবারে নিখুঁতভাবে তারা প্রতিমা ও মণ্ডপ ফুটিয়ে তুলেছে।
ধ্রুব বলে, ‘এমনিতে চিত্রঙ্কন শেখা হয়নি। নিজে যেভাবে মনে ধরেছে সেভাবেই এঁকেছি। মহালয়ার সময় থেকে বেশ জোরেশোরে কাজ শুরু হয়। নির্জন জানায়, কাগজ দিয়ে প্রতিমা ও মণ্ডপ বানাতে পেরে তার ভালো লাগছে।