হোম ফিচার যশোর সদর কৃষি অফিসারের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

যশোর অফিস :

যশোর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার শেখ সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ভেজাল বিরোধী অভিযানের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এই কৃষি কর্মকর্তা। তার চাহিদা মত টাকা না দিলে সেখানে অভিযানের নামে লুটপাট চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। আবার অনেক স্থান টাকা নিয়ে নিশ্চুপ থাকেন এই কৃষি কর্মকর্তা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার শেখ সাজ্জাদ হোসেন যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন এলাকার অবৈধ টাকা আয়ের জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করতে থাকেন। কিন্তু কতিপয় অসাধু অবৈধ ভেজাল সার কারখানার মালিকদের সাথে দহরম-মহরম সম্পর্ক গড়ে তোলেন। যেসব ভেজাল সার কারখানা থেকে উপরি পাচ্ছেন সেখানে কোন অভিযান পরিচালনা করছেন না বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার যশোর সদরের আড়পাড়া ও তালবাড়িয়া গ্রামে দুটি সার কারখানায় অভিযান চালায় শেখ সাজ্জাদ হোসেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাল বদ্ধ থাকায় ফিরে আসেন কৃষি অফিসার সাজ্জাদ হোসেন।

অভিযোগে জানা যায়, চলতি মাসের ৫ তারিখে সদর উপজেলার ‘ঘুরুলিয়ায় সানওভার এগ্রো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি’ অভিযান চালায় কৃষি অফিসার। রাতের আধারে ওই কারখানা থেকে ৮২ টন ম্যাগনেশিয়াম, ৫ টন জিং অ্যাশ, দস্তা, জেনারেটর, ১০০ বস্তা জ্বালানি কুড়াসহ সার তৈরির মেশিনারি মালামাল নিয়ে আসে। সেই সাথে কারখানা মালিক সোহানুর রহমান শিহাবকে কারা ও অর্থদন্ড দেয়।

এ ঘটনায় আদালত সার ব্যবস্থাপনা আইন ২০০৬ (১) ধারায় কারখানা মালিক শিহাবকে ছয় মাসের সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

সূত্র জানায়, অভিযানের সময় কারখানার মালিক সোহানুর রহমান শিহাব সার আমদানির বৈধ কাগজ, কারখানার সকল কাগজপত্রও দেখায়। কিন্তু কৃষি অফিসার তা না দেখে জেল-জরিমানা করেন।

সূত্র জানায়, কৃষি অফিসার ওই কারখানা থেকে জব্দকৃত সার ও সার তৈরির সারঞ্জম রাতেই অন্য একটি কারখানায় বিক্রি করে দেন। এছাড়া শনিবার ৭ আগস্ট আরো কিছু মালামাল বিক্রি করে দেন সাজ্জাদ হোসেন।

সার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ কৃষি অফিসার সাজ্জাদ হোসেন যশোরে যোগদানের পর থেকে অবৈধ উপায়ে টাকা আয়ের নেশায় মত্ত হয়ে উঠেছে। তার কারণে বৈধ সার ব্যবসায়ীরাও এখন ঠিকমত ব্যবসা করতে পারছে না। তাকে টাকা না দিলে তিনি কাউকে ব্যবসা করতে দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তারা আরো বলেন, চলতি বছরে যশোরাঞ্চলে সার সংকট হলে তার জন্য কৃষি অফিসারই দায়ী থাকবেন।

তালবাড়িয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম নামে এক কৃষক বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) বেলা সাড়ে ১০ থেকে ১১ টার সময় কৃষি অফিসার সাজ্জাদ হোসেনসহ কয়েকজন গাড়ীতে করে এসেছিলেন। তারা রাস্তার ওপর গাড়ি রেখে সার কারখানায় যান। সেখানে বন্ধ দেখে ছবি তুলে নিয়ে গেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি অফিসার সাজ্জাদ হোসেন অস্বীকার করে বলেন, কোন অভিযানের বিষয়ে কাউকে কিছু বলা যাবে না। সরকারি নিয়ম মেনে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আমাদের সোর্স আছে, সোর্স মারফত খবর পেয়ে আমরা অভিযান চালায়।

আজ (বৃহস্পতিবার) অভিযান চালিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) কোথায় কোন অভিযান পরিচালনা করা হয়নি।

এ বিষয়ে জানার জন্য জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অভিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে কয়েক বার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন