হোম জাতীয় বরিশালের ইউএনও-ওসির বিরুদ্ধে মামলা, তদন্তে পিবিআই

জাতীয় ডেস্ক :

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুটি মামলার আবেদ‌ন আম‌লে নি‌য়ে পিবিআইকে তদন্তের নি‌র্দেশ দি‌য়ে‌ছেন আদালত। একইসঙ্গে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদাল‌তের বিচারক মাসুম বিল্লাহ এ আদেশ দেন বলে নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন আদাল‌তের না‌জির কামরুল হাসান।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন এবং সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. বাবুল হাওলাদার ইউএনও, আনসার সদস্য ও কোতোয়ালি থানার ওসিসহ অজ্ঞাতনামা শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক দুটি নালিশি আবেদন করেন।

এদিকে একই আদালতে ইউএনও মুনিবুর রহমানের উপর হামলা চেষ্টার ঘটনায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের ২২ নেতা-কর্মীর জামিনের আবেদন করা হলে বিচারক সেই আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারা হেফাজতে রেখে সুচিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

রফিকুল ইসলাম খোকন এবং মো. বাবুলের করা মামলার আবেদনে ইউএনও মুনিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিসিসি’র কাজে বাধাদান, বিনা উসকানিতে বিসিসি’র কর্মচারীদের উপর গুলিবর্ষণের নির্দেশ প্রদান, হামলা, গুলিবর্ষণের মাধ্যমে একাধিক ব্যক্তির অঙ্গহানি এবং ৩০/৪০ জনকে আহত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার আবেদনে, ইউএনও ছাড়াও ওসি, এসআইসহ ১৮ আগস্ট রাতে তার বাসভবনে দায়িত্বরত আনসার সদস্যসহ ৪০/৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। বাদীর পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আদালতে উপস্থিত থাকা বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাইয়ুম খান কায়সার জানান, আবেদনের শুনানি শেষে বিজ্ঞ বিচারক মাসুম বিল্লাহ সিদ্ধান্ত ঘোষণার জন্য রেখেছেন। তিনি সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর জানা যাবে যে মামলাটি গ্রহণ নাকি খারিজ করা হবে।

একই আদালতে সকালে আওয়ামী লীগের ২২নেতা-কর্মীর জামিনের আবেদন জানান তাদের আইনজীবী। ১৯ আগস্ট রাতে ইউএনও মুনিবুর রহমানের বাসায় হামলা চেষ্টার ঘটনায় দায়ের পৃথক দুটি মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে তাদেরকে জেল হাজতে রেখে সুচিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

এর আগে গত ১৯ আগস্ট বিকেলে ইউএনও বাসভবনে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আলাদা দুটি মামলা হয়।

নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, ইউএনওর বাসায় হামলার ঘটনায় নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত কয়েকশ’ জনকে আসামি করে আলাদা দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। একটি মামলার বাদী হয়েছেন ইউএনও মুনিবুর রহমান নিজে। অপরটির বাদী পুলিশ। এই মামলায় ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুই মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সের‌নিয়াবাত সা‌দিক আব্দুল্লাহ‌কে।

গত ১৮ আগস্ট রাতে বরিশাল সদর ‍উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবৈধ বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ‍উচ্ছেদ করতে অভিযান চালায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাদের অভিযান বন্ধ করে সকালে অভিযান চালাতে বলেন।

কিন্তু সেটি না মেনে ইউএনওর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন সিটি করপোরেশনের কর্মী এবং আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তারা ইউএনওর বাসভবনে হামলা চালান। এ সময় ইউএনওর নিরাপত্তায় আনসার সদস্যরা গুলি চালালে বেশ কয়েকজন আহত হন।

খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে পুলিশের সঙ্গেও হামলাকারীদের সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হন।

পরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন