হোম ফিচার মণিরামপুরে শ্যামকুড় ইউপি নির্বাচনী মাঠে মনিরুজ্জামান মনি শক্ত বলয় গড়ে তুলেছেন, রুখবার কেউ নেই!

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :

মণিরামপুর উপজেলার ১২নং শ্যামকুড় ইউনিয়ন থেকে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবারও আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে এবং চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করতে শক্ত বলয় গড়ে তুলেছেন মোঃ মনিরুজ্জামান মনি। দলমত নির্বিশেষে তিনি গোটা ইউনিয়নের মানুষের সাথে যেভাবে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন এবং অসহায়, গরীব, দুঃখীদের কল্যাণে এগিয়ে এসেছেন তাতে আগামী নির্বাচনেও তার বিজয় সুনিশ্চিত। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম নওয়াব আলী সরদারের ছেলে এই মনিরুজ্জামান মনি।

এলাকা ঘুরে জানাযায়, উপজেলার সবচেয়ে বেশি ভোটার এবং বড় ইউনিয়ন হলো শ্যামকুড়। ইউনিয়নটিতে ২৭ হাজার ৩৭৯ জন ভোটারের মধ্যে ১৪ হাজার ৮ জন পুরুষ এবং ১৩ হাজার ৩৭১ জন মহিলা ভোটার রয়েছে। এ ইউনিয়নটিতে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত থাকলেও মনিরুজ্জামান মনি গত নির্বাচনে বিপুল ভোট ব্যবধানে বিজয়ী হন।

চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি ইউনিয়নের সর্ব সাধারনের সাথে যেভাবে মিলেমিশে চলেছেন এবং সখ্যতা গড়ে তুলেছেন তাতে আগামী নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হবেন বলে একাধিক সূত্র থেকে জানাগেছে। এমনকি ইউনিয়নে যেভাবে উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন এবং আওয়ামীলীগ দলীয় সংগঠন শক্ত অবস্থানে নিয়ে একটি বলয় তৈরি করেছেন তাতে দলীয় মনোনয়নও তার সুনিশ্চিত রয়েছে বলে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের প্রবীন নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা হেরমত আলী জানিয়েছেন।

৪০ বছর বয়সী উদীয়মান এ নেতা ২০০৪ সাল থেকে একটানা ১৭ বছর শ্যামকুড় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত কেশবপুর কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ২০০০ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত শ্যামকুড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও মণিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। ২০০৩ সালের শেষের দিকে ওই একই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হন। এরপর ২০১৬ সালের ২২ মার্চ আওয়ামীলীগ দলীয় নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন পেয়ে প্রথমবারের মত প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোট ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

গত শনিবার (৫জুন) সরেজমিন ইউনিয়ন পরিষদে গেলে শত ভিড়ের মধ্যেও কথা এ নেতার সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, বাবার হাত ধরেই আমার রাজনীতির হাতেখড়ি। দীর্ঘদিন ধরে বাবার পিছু পিছু ঘুরে শিখেছি বাবা কিভাবে ইউনিয়নের মানুষকে ভালবাসতেন। তিনি আওয়ামীলীগ ঘরোয়া ব্যক্তি থাকার সত্ত্বেও দলমত নির্বিশেষে সকলের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। বাবার সাথে ছিলোনা কারোর কোন বিরোধ। অন্যায়ের সাথে কখনও আপোষ করতেননা। সবসময় ন্যায়ের পথে চলতেন। তিনি ১৯৯৭ সালে চেয়ারম্যান থাকাকালে পরিষদের কোন অর্থ বা মালামাল লোপাট করতে দেখিনি।

তিনি আরও বলেন, আমার বাবা মরহুম চেয়ারম্যান নওয়াব আলী সরদার ১৯৮৮ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত একটানা শ্যামকুড় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০২ সালের ২৩শে মার্চ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। বাবার সেই লালনকে পুঁজি করে আজ আমি এ পর্যন্ত পৌছাতে পেরেছি।

এইচএসসি পাশ শিক্ষিত এ চেয়ারম্যান আরও বলেন, মণিরামপুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের মধ্যে কিছু ইউনিয়ন পরিষদে বিভিন্ন প্রকল্পের মালামাল বন্টন এবং উন্নয়নমূলক কাজের মধ্যে কমবেশি ত্রুটি লক্ষ্য করা গেলেও আমার ইউনিয়নে সরকারী বরাদ্দের শতভাগ কাজ হয়েছে। আমি আমার প্রাণের সংগঠন আওয়ামীলীগ দলকে ইউনিয়নে একটি শক্ত অবস্থানে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি।

অনুরুপভাবে দলমত নির্বিশেষে ইউনিয়নবাসীর সাথে মিলেমিশে মানুষের মন জয় করে একটি নিজস্ব বলয়ও গড়ে তুলেছি। ইউনিয়নের উন্নয়নমূলক কাজ, দলকে সুসংগঠিত এবং বিভিন্ন শেণিপেশার মানুষের মনের গভীর স্থান করে ভালবাসা অর্জন করেছি তাতে আশাবাদী আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবারও দলীয় মনোনয়ন এবং চেয়ারম্যান নির্বাচিত নিশ্চিত হবো।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আগরহাটী গ্রামের জালাল উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, দলমতের ভেদাভেদ ভুলে জনপ্রিয় এ নেতা নিত্যদিন কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ইউনিয়নের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়, বিভিন্ন বাজার, রাস্তার মোড়ে এবং চায়ের দোকানে জনসাধারনের সাথে মতবিনিময় করে চলেছেন। ইউনিয়নের অসহায়, গরীব ও দুঃখী মানুষের সেবায় তিনি নিজেকে আত্মনিয়োজিত করে চলেছেন।

সময় অসময়ে মানুষের বিপদ-আপদে ছুঁটে যান এবং বিপদগ্রস্থদের পাশে ঢাল হয়ে দাড়ান তিনি। এ নেতা দলীয় পদ-পদবী ছাড়াও এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছেন। দলীয় সাংগঠনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি বেকার, শিক্ষিত যুবক এবং সুধীমহলের সাথে নিয়ে বিভিন্ন আত্মসামাজিক কাজের সাথে সময় কাটান।

তিনি দলীয় পদ-পদবীর বাইরে নিজস্ব অর্থায়ন ও এলাকাবাসীর সহযোগীতায় আমিনপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত করার সার্বিক সহযোগীতা করেছেন। এছাড়া চিনাটোলা কলেজের তিনবার (ছয় বছর) সভাপতি, বাঙ্গালীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তিনবার (ছয় বছর) সভাপতি দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নিজস্ব তহবিল এবং সরকারী বরাদ্দ দিয়ে রাস্তা, ব্রীজ, কালভার্ট নির্মাণসহ মসজিদ, এতিমখানা, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, মন্দির ও সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন কাবে সাহায্য করা ছাড়াও ইউনিয়নে অসংখ্য উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন।

শ্যামকুড় ইউপির ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান এবং ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল খালেক বলেন, মনিরুজ্জামান মনিকে দলীয় মনোনয়ন দিলে আগামী নির্বাচনে তার বিজয় সুনিশ্চিত।

ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতারা আরও বলেন, মণিরামপুর উপজেলার বিএনপির বারবার নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মশিউর রহমানের এ ইউনিয়নের বেশ গ্রহনযোগ্যতা ছিল। তিনি আকষ্মিক মৃত্যুবরণ করায় বর্তমানে মনিরুজ্জামান মনি এককভাবে একটা বলয় তৈরি করে নিয়েছেন। যা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে এবং ইউনিয়নে দলীয় সাংগাঠনিক কার্যক্রম বিগত দিনের চেয়ে আরও মজবুত হবে। উল্লেখ্য, ইউনিয়ন থেকে আওয়ামীলীগ-বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন এবং তারা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন