মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
তপ্ত গ্রীষ্মের বার্তা নিয়ে ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া। সবুজ পাতার ফাঁকে উজ্জ্বল লাল রঙের কৃষ্ণচূড়ার অপূর্ব বাহারি দৃশ্য দেখে যে কোন পথিকের দৃষ্টি কাড়বে বৈকি! কবি এস এম খায়রুল বাশার কৃষ্ণচূড়া নিয়ে কবিতা লিখেছেন- কৃষ্ণচূড়া, লালে রাঙা আগুন ঝরা-প্রিয়ার খোপার ফুল। কৃষ্ণচূড়া, হাওয়ায় খেলা পাপড়ি দোলা-বঁধুর কানের দুল। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, গন্ধে উদাস হওয়ার মতো উড়ে/তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জুরী। কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জরি কর্নে-আমি ভূবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্নে।’
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার এমন পঙতি দিয়ে বোঝা যায় কতটা সৌন্দর্য কৃষ্ণচূড়া প্রকৃতিকে দান করেছে! মাত্র দুই/ তিন দিন আগেও প্রকৃতি ছিলো রুক্ষ। বৈশাখে আগুন ঝরাচ্ছে আকাশ, কাঠফাটা রোদে তপ্ত বাতাস। প্রাণ ও প্রকৃতি যখন প্রখর রোদে পুড়ছে, কৃষ্ণচূড়া ফুল সৌন্দর্যের বার্তা নিয়ে আহবান করে সব পথিককে। গ্রীষ্মের এ প্রাণহীন রুক্ষতা ছাপিয়ে প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়া নিজেকে মেলে ধরেছে যেন আপন মহিমায়। যেন রক্ত লাল রঙে পথে-প্রান্তরে,মাঠের ধারে কৃষ্ণচূড়ার পসরা সাজিয়ে বসে আছে প্রকৃতি। এ অপরূপ দৃশ্য দেখে প্রাণে আসে নতুন উদ্যম।
অবাক চোখে তাকিয়ে সব পথিক এ অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করবেই। প্রতিটি মন ছুঁয়ে রঙিন হয়ে যায় কৃষ্ণচূড়ার রঙে। আমাদের অঞ্চলে সাধারণত এপ্রিল-জুনে কৃষ্ণচূড়া ফুল ফুটে থাকে। এ সময়টাতে গ্রীষ্মের প্রকৃতি চোখ ধাঁধানো টুকটুকে সিঁদুর লাল কৃষ্ণচূড়ায় সাজে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় বৈশাখের প্রখর রৌদ্রের সবটুকু গায়ে জড়িয়ে নিয়েছে এ রক্তলাল পুষ্পরাজি। সবুজ পাতার মাঝে যেন আগুনের ফুলকি ছড়াচ্ছে। প্রকৃতির এই পরিবেশে নজরকাড়া ফুলের বর্ণিল রঙের সাজে এখন গ্রামীণ জনপদও অপরূপ সাজে সেজেছে।
গত সোমবার ( ৩ এপ্রিল) যশোরের মণিরামপুর উপজেলার নিভৃত পল্লী কোমলপুর গ্রামের রাস্তা দিয়ে মোটরবাইকে চড়ে যাবার সময় রাস্তার ধারে একটি আগুনলাল কৃষ্ণচূড়া’র মনোরম দৃশ্য দেখে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে অবাক দৃষ্টিতে দু’নয়ন ভরে এর অপরূপ শোভায় মনটা জুড়িয়ে গেল! গ্রামীণ পরিবেশে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক রক্তিম বৃহৎ পুষ্পমঞ্জরি সদৃশ আগুনলাল কৃষ্ণচূড়া। জানা যায়, কৃষ্ণচূড়া একটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ।
যার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া (Delonix regia)। এই গাছ চমৎকার পত্রপল্লব ও আগুনলাল কৃষ্ণচূড়া ফুলের জন্য প্রসিদ্ধ। এটি ফ্যাবেসি (Fabaceae) পরিবারের অন্তর্গত একটি বৃক্ষ যা গুলমোহর নামেও পরিচিত। কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল, কমলা, হলুদ ফুল ও উজ্জ্বল সবুজ পাতা এক অন্যরকম দৃষ্টিনন্দন করে তোলে।