মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
অ্যাপাচি মোটরসাইকেল কিনে না দেয়ায় বাবার ওপর অভিমান করে চিরকুট লিখে মনিরামপুরে কলেজ ছাত্র গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রাকিবুল হাসান (২০) নামের কলেজ ছাত্র যশোরের মণিরামপুর উপজেলার নোয়ালি গ্রামের আবু মুছা গাজীর ছেলে। সোমবার সকালে শোবার ঘর থেকে রাকিবুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনরা।
তবে, এটিকে আত্মহত্যা হিসেবে মানতে নারাজ ওই কলেজ ছাত্রের মা লিলিমা খাতুন। তার দাবি, সৎ মা ও বাবা মিলে শ্বাসরোধে মেরে রাতে ঘরের আড়াই ছেলের মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে দিয়েছে। খবর পেয়ে সোমবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
জানাযায়, ৫ বছর বয়সে মৃত রাকিবুল হাসানের মা ও বাবার মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকেই রাকিবুল ও তার ছোট বোন লাবণি সৎ মা রেশমা খাতুন ও বাবার পরিবারে ছিল। সে সাতক্ষীরা জেলার কলোরোয়া উপজেলার নাসির উদ্দীন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। কয়েকদিন ধরে তার বাবার কাছে আ্যাপাচি মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার জন্য বাবার কাছে বাইনা ধরে। ধান বিক্রি করে কিনে দিবে এ আশ্বাস দেয়ার পরও অভিমানে রাকিবুল হাসান আত্মহত্যা করেছে বাবার দাবি।
রাকিবুলের মা লিলিমা খাতুন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, প্রাপ্তা বয়সের আগেই পাশের বাড়ির ছেলে আবু মুছার সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তার ওপর নির্যাতন চালাতো মুছা। দাম্পত্য জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়। এরমধ্যে তার স্বামী রেশমা খাতুন ( বর্তমান স্ত্রী) নামের এক মেয়ের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে এবং মামলার শিকার হয়। এক পর্যায় রেশমাকে বিয়ে করে বাড়িতে আনলে তার ও সন্তানদের ওপর নির্যাতন বেড়ে যায়। এক পর্যায় তাকে তালাক দেয়ার ৮ বছর পর তিনি অন্যত্রে বিয়ে করে ঘর সংসার করেন। তার দাবি সৎ মা রেশমা ও স্বামী আবু মুছা মিলে ছেলেকে মেরে ঘরের আড়াই মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে।
এদিকে যে ঘরের আড়ায় রাকিবুল গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে দেখানো হচ্ছে সেটি শোবার খাট থেকে উচ্চতা মাত্র ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি। আর গলায় রশি দিয়ে মৃত রাকিবুল ইসলামের উচ্চতাও প্রায় ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি। সেই কারনে এত কম উচ্চতায় গলায় রশি দিয়ে মৃত্যুর বিষয়টি অনেকেই সন্দেহের চোখে দেখছেন। স্থানীয় রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ শাহাজাহান আলী জানান, ময়না তদন্ত সম্পন্নের পর সত্য বেরিয়ে আসবে। থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।