হোম আন্তর্জাতিক স্বজনরা এগিয়ে এলনা করোনার ভয়ে, লাশ দাফন করলেন যুগান্তরের সাংবাদিক

স্বজনরা এগিয়ে এলনা করোনার ভয়ে, লাশ দাফন করলেন যুগান্তরের সাংবাদিক

কর্তৃক
০ মন্তব্য 132 ভিউজ
অনলাইন ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মোকলেছার (৫৫) নামে এক ডাইং কারখানার শ্রমিক শবেবরাতের রোজা রাখা অবস্থায় হঠাৎ বুকে ব্যাথা উঠে নিজ ঘরেই মারা যান।

শুক্রবার দুপুরে ফতুল্লার সস্তাপুর গাবতলা এলাকায় এঘটনা ঘটে। স্ত্রী ও তিন শিশু সন্তানের আহাজারিতে বাড়িওয়ালাসহ আশপাশের কারো মনই গলেনি একটু সহযোগিতার হাত বাড়াতে।শুক্রবার দুপুর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত লাশ নিয়ে ঘরেই বসে ছিলেন নিহতের পরিবার। অবশেষে যুগান্তরের ফতুল্লা প্রতিনিধি সাংবাদিক আলামিন প্রধানের উদ্যোগে রাত ১১টায় স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।

নিহত মোকলেছার নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর থানার খাতামধুপুর ঠনঠনিপাড়া গ্রামের তফেল মামুদের ছেলে। তিনি ফতুল্লার সস্তাপুর এলাকায় নুর ইসলামের বাড়িতে স্ত্রী ও তিন শিশু সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করে একটি ডাইং কারখানায় কাজ করতেন।

নিহতের স্ত্রী লাইলী জানান, তার স্বামী মোকলেছার শবেবরাতের তিনটি রোজা রেখেছেন। বুধবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রেখেই ডাইং কারখানায় কাজ করেছেন।

শুক্রবার তৃতীয় রোজা রেখে ছিলেন, এদিন কারখানা বন্ধ ছিলো তাই বাসায় ছিলেন তিনি। হঠাৎ দুপুরে স্ত্রীকে ডেকে বলেন তার বুক ব্যাথা করছে, এ কথা বলেই তিনি বিছানায় শুয়ে পড়েন।

এরপর অনেক ডাকাডাকি করেও কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যায়নি। তখন কান্নাকাটি করে বাড়িওয়ালাকে ডাকাডাকি করলেও করোনা ভাইরাসের মারা গেছে ভেবে আতঙ্কে কেউ আসেনি।

মৃতের শিশু সন্তানরাও অনেককে ডেকেছে, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে মৃতের বড় ভাই এসে রাত ১০টায় স্থানীয় সাংবাদিক আলামিন প্রধানের কাছে গিয়ে মৃত্যুর খবর জানান।

স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার ওই বাড়ির সামনের বাড়িতে মহিউদ্দিন নামে একজন ব্যবসায়ী করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন। তার লাশ হাসপাতাল কতৃর্পক্ষই দাফন করেছে। এ মুহুর্তে পাশের বাড়িতে আরেকজনের মৃত্যুতে অনেকেই ভয়ে কাছে যাননি।

সাংবাদিক আলামিন প্রধান বলেন, খবর পেয়ে নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানতি পারি তিনি কোন রোগে আক্রান্ত ছিলেন না। রোজা অবস্থায় বুকে ব্যাথা উঠে তিনি মারা যায়।

বিষয়টি সদর ইউএনও নাহিদা বারিক ও ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেনকে জানানো হয়। তারা লাশটি দাফনের জন্য আমাকে অনুরোধ করেন। এরপর ইউএনও নাহিদা বারিকের সার্বিক সহযোগিতায় শুক্রবার রাত ১১টায় সস্তাপুর-কোতালেরবাগ কবরস্থানে দাফন করা হয়। স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা উজিউল্লাহ জানাজার নামাজ পড়ান।

ইউএনও নাহিদা বারিক জানান, মৃতের পরিবারের কাছে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে আরও সহযোগিতা করা হবে।

তিনি আরও জানান, করোনা ভাইরাস থেকে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। তবে পার্শ্ববর্তী কেউ বিপদে পড়লে তাকে যতোটুকু সম্ভব সহযোগিতা করতে হবে।

নাহিদা বারিক আরও বলেন, সদর উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক যে কোনো সহযোগিতায় সবার পাশে আছে। কিন্তু সবাইকে ঘরে থাকতে হবে, খাবার-ওষুধ প্রয়োজন হলে আমার নাম্বারে ফোন করুন আমি পৌঁছে দেবো।

সূএ যুগান্তর

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন