নিজস্ব প্রতিনিধি :
বিএনপি ক্যাডার ভূমিদস্যু ভাইয়ের কবল থেকে পৈত্রিক সম্পত্তির সুষ্ঠু বন্টন এবং জীবনের নিরাপত্তার চেয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোশাফররফ হোসেন মশু। রোববার দুপুরে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। তিনি দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের পুত্র।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বীর-মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমান, বীর-মুক্তিযোদ্ধা হাসানুজ্জামান ও বীর-মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর করিম।লিখিত অভিযোগের তিনি বলেন, আমার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে ১২ বছর যাবৎ আমার পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগদখল করতে পারছিনা। এমন কি পৈত্রিক বাড়ীতেও অবস্থান করতে পারিনা। ভূমিদস্যু আলতাফ সম্পত্তির লোভে আমার পিতাকেও কয়েক বার হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিল। যা এলাকাবাসী অবগত আছেন। প্রতিবেশীর সাথে সামান্য বিবাদ হলেই অস্ত্রবাজ আলতাফ তাৎক্ষনিক প্রকাশ্যে পিস্তল উচিয়ে গুলি করতে উদ্যত হত।
আমার দুই ছেলে ঢাকাতে চাকুরীরত অবস্থায় আছে। এই সুযোগে আমার সম্পত্তি আমার সহোদর ভাই আলতাফ ও সাফায়েত অবৈধভাবে জবর দখল করে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে আমার ৩ বিঘা পৈত্রিক সম্পত্তি কৌশলে তাদের নামে রেকর্ড করেছে। তাছাড়া আমাদের পৈত্রিক কয়েক বিঘা-জমি আমাকে না জানিয়ে অন্যত্র বন্ধক দিয়েছে। জমিভাগ বণ্টন নামা না হওয়া স্বত্তে্ও অস্ত্রবাজ আলতাফ ও সাফায়েত জমি বিক্রি করার জন্য পায়তারা চালাচ্ছে। যদিও আমি সখিপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস এবং জেলা রেজিস্টার মহোদয়ের কাছে এই বিষয় নিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি। যে কারনে রেজিস্ট্রি বন্ধ আছে। আমাদের পারিবারিক সম্পত্তি ভাগ ও বন্টননামা করার উদ্দেশ্যে স্থানীয় ভাবে পারিবারিক মুরুব্বীদের নিয়ে কয়েক বার আলোচনা ও মিমাংসায় বসলে বিএনপি দলীয় আলতাফ ও সাফায়েত পারিবারিক মুরুব্বীদের কথা না মেনে তাদেরকে অপমানিত করেছে। তারা আমার চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আতিয়ার রহমান এর জমির ইজারা না দিয়ে অবৈধভাবে ভোগ দখল করে যাচ্ছে এবং অনৈতিকভাবে জমি বিক্রি করতে না পেরে তারা আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আতিয়ার রহমান, ও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে হয়রানি করে যাচ্ছে। আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আতিয়ার রহমান তার জীবনের নিরাপত্তা ও সমাধান চেয়ে গত ২৬ আগস্ট ২০২০ তারিখে আইজিপি মহোদয়ের কাছে আবেদন করেন। বিষয়টি অনুসন্ধান ও মীমাংসার জন্য ১১ অক্টোবর ২০২০ দেবহাটা সার্কেল কর্তৃক বাদী ও বিবাদী পক্ষ কে হাজির হওয়ার জন্য লিখিত ভাবে আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বিএনপি দলীয় আলোচিত অস্ত্রবাজ ও ভূমিদস্যু আলতাফ সরকারী আদেশ অমান্য করে হাজির হয়নি। সেদিন দেবহাটা উপজেলা মৎসজীবি দলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাফায়েত হোসেনের কাছ থেকে একটি চোরাই মোটর সাইকেল আটক করে দেবহাটা থানা পুলিশ। পরবর্তীতে গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে আমার ভাই সাফায়েত হোসেন অসুস্থতার নামে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমি পুলিশ সুপার মহোদয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বিএনপি ক্ষমতা হারানোর পর অস্ত্রবাজ আলতাফ হঠাৎ মুখে দাড়ি এবং তবলীগ জামাতে যোগ দিয়ে সুফি সেজেছেন। অথচ বিএনপি শাসনামলে এই অস্ত্রবাজ আলতাফ হাজার হাজার বিঘা জমি অবৈধভাবে ভোগদখল করে। ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। যা নোড়ার চক এলাকায় অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসবে। বিএনপি শাসনামলে প্রকাশ্যে অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। বর্তমানে ধর্মীয় লেবাস পরে পারিবারিক সম্পত্তি অবৈধভাবে ভোগ দখল করে যাচ্ছে। তার কাছে এখনও অবৈধ অস্ত্র আছে। ওই অস্ত্রের জোরেই আমাকে এবং আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমানকে জিম্মি করে রেখেছে। তার বিরুদ্ধে মামলাও রয়েছে। দেবহাটা থানার মামলা নং-৩, তারিখ ০৪ফেব্র:২০০৩। আলতাফ নোড়ারচক এলাকায় ৬০০ বিঘা জমি অবৈধ ভাবে দখলে রাখতে গিয়ে জমির মালিক রুহুল কুদ্দুস, আতিয়ার রহমান এবং নেসার আলীসহ কয়েকজনকে প্রকাশ্যে গুলিবিদ্ধ করে যা ০৪ ফেব্র: ২০০৩ দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। যদিও তৎকালীন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সে বেচে যায়।
আমার ভাই দেবহাটা উপজেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও ভূমিদস্যু মোঃ আলতাফ হোসেন গত ১৪ অক্টোবর ২০২০ সংবাদ সম্মেলনে আমার চাচা ও আমার চাচাতো ভাইদের বিষয়ে যে সকল তথ্য উপস্থাপন করেন তা সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।গত ১১ অক্টোবর ২০২০ খ্রিঃ তারিখে ভূমিদস্যু মোঃ আলতাফ হোসেন সহকারী পুলিশ সুপার (দেবহাটা সার্কেল) এর লিখিত আদেশ অমান্য করে। অথচ সংবাদ সম্মেলনে সেই আবার সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। নিজে আইন অমান্য করে আবার আইনের সহযোগিতা কামনা করছেন।
আমার পৈত্রিক সম্পত্তির সুষ্ঠু বন্টনের দাবি করায় অস্ত্রবাজ ভ‚মিদস্যু আলতাফ ও শাফায়েত আমাকে নানাভাবে হয়রানি এবং হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েও ওই ভ‚মিদস্যু অস্ত্রবাজের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি। আলতাফ অত্যান্ত হিং¯্র প্রকৃতির সে যে কোন সময়ে আমার জান মালসহ বড়ধরনের ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে বলে আশংকা করছি। আমি একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ওই ভ‚মিদস্যু অস্ত্রবাজ আলতাফ ও শাফায়েতের কবল থেকে রক্ষা পেতে মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয়,পুলিশ সুপার মহোদয় সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সকলের কাছে আমার নিজের নিরাপত্তা ও পৈত্রিক সম্পত্তির আপোষ বন্টননামার বিষয়ে সহযোগিতা কামনা করেছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।