হোম অন্যান্যসারাদেশ খুলনার ডুমুরিয়ার আলোচিত ‘হালিমা মেমোরিয়াল নার্সিং হোম’ এ অপচিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু

খুলনার ডুমুরিয়ার আলোচিত ‘হালিমা মেমোরিয়াল নার্সিং হোম’ এ অপচিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 127 ভিউজ

খুলনা অফিস:

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগরের আলোচিত ‘হালিমা মেমোরিয়াল নার্সিং হোম’ নামক ক্লিনিকে এবার অপচিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্লিনিক মালিক সহ ৭/৮ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ক্লিনিক বন্ধ করে তারা আত্মগোপন করেছেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২৯ সেপ্টেম্বর যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলাধীন চুয়াডাঙ্গা গ্রামের হেলাল উদ্দিন গাজী তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রী মোসাঃ ইয়াসমিন বেগমকে নিয়ে ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর ‘হালিমা মেমোরিয়াল নার্সিং হোম’ নামের ক্লিনিকে আসেন। এসময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আলট্রাসনোগ্রাফি করে বলেন, মা ও অনাগত সন্তান সুস্থ্য আছে, তবে জরুরীভাবে সিজার না করলে বাচ্চার সমস্যা হতে পারে।

এমতাবস্থায়, স্বামী হেলালকে বিকেল ৫টার দিকে কিছু জরুরী ঔষধ আনার জন্যে বাইরে পাঠিয়ে স্ত্রী নাসিমাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। এক পর্যায়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অপরেশন থিয়েটার থেকে নবজাতক বের করে দিয়ে বলে বাচ্চার অবস্থা খারাপ দ্রুত খুলনায় নিতে হবে। তখন দেখা যায় ভুল অপারেশনের ফলে নবজাতকের পেট কেটে নাড়ি ভুড়ি বেরিয়ে এসেছে। তাৎক্ষনিক বাচ্চাটিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে খুলনা থেকে ফিরে এসে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের নিকট বাচ্চা মারা যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে ক্লিনিক মালিক কামাল হোসেন ও তার সহযোগিরা তার উপর চড়াও হয়ে গালিগালাজ করে ও হুমকি ধামকি দিয়ে ক্লিনিক থেকে বের করে দেয়।

ওই ঘটনায় হেলাল উদ্দিন ১ অক্টোবর ডুমুরিয়া থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। এজাহারের ভিত্তিতে ২ অক্টোবর দুপুর ১২টায় ডুমুরিয়া থানার এস.আই হাফিজুর রহমান সরেজমিনে তদন্তে ঘটনার সত্যতা পান। পরে ৪ অক্টোবর মামলাটি রেকর্ড হয়। মামলায় ৪জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৩/৪ জন অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ক্লিনিক মালিক কামাল হোসেন বলেন, সাতক্ষীরার বে-সরকারী সংস্থা ঋ-শিল্পির মেডিকেল অফিসার ডাঃ বরকত আলী অপারেশনটি করেছেন। সিজারের পরে বাচ্চাটিকে ওই অবস্থাতেই বের করা হয়েছে। কিন্তু ভূমিষ্ট হওয়ার সময় সে জীবিত ছিল, একারণে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।

ডুমুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আমিনুল ইসলাম বিপ্লব এবং ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার অনুসন্ধানে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এস.আই হামিদুর রহমান মামলাটি তদন্ত করছেন। আসামিরা পলাতক রয়েছে, তবে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

প্রসঙ্গত, আলোচিত এ ক্লিনিকটিতে দীর্ঘ দিন ধরেই অপচিকিৎসার অভিযোগ রয়েছে। একাধিক মামলাও রয়েছে ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে। এমনকি ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে সীলগালা করে বন্ধ করে দিলেও তারা আইনের ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে বেরিয়ে বারবারই একই অপরাধ করে আসছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন