খুলনা অফিসঃ
করোনার কারণে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আপাততঃ কাটছে না। বিগত ৬ মাস ধরেই এ নির্দেশ বলবৎ রয়েছে। ট্যুর অপারেটরদের দাবি এবং বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহনেও বন বিভাগ তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি। আসছে শীত মৌসুমেও এ অবস্থা থাকলে ট্যুর ব্যবসায়ীরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে দাবি করেছেন তারা।
বনবিভাগ সূত্র জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে গেল ১৯ মার্চ থেকে পুরো সুন্দরবনে পর্যটকদের যাতায়াত ও নৌ-যান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বনবিভাগ। সেই থেকে প্রায় ৬ মাস ধরে বন্ধ সুন্দরবনে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের যাতায়াত। আসন্ন শীত মৌসুম পর্যটন খাতের সেরা সময়। কিন্তু এই মৌসুমেও সুন্দরবনে পর্যটকরা প্রবেশ করতে পারবে কিনা তা বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। এমনই অনিশ্চিয়তায় রয়েছে খুলনা অঞ্চলের পর্যটন শিল্প। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ট্যুর অপারেটর, লঞ্চ/জাহাজ মালিক ও শ্রমিকসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবাই।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গেল মৌসুমেও ঠিকমত ব্যবসা করতে পারেননি তারা। করোনা ভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর এখন দেশের পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল। যেখানে দেশের সব সেক্টর খোলা সেখানে সুন্দরবনে পর্যটকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রাখার কোন মানে হয় না। আগামী মৌসুমে মানুষ সুন্দরবনে প্রবেশ করতে ইতোমধ্যে বুকিং দেওয়া শুরু করেছে। কি হবে না হবে সেবিষয়ে অনেকটা অনিশ্চয়তার মধ্যেই মানুষ। এদিকে সুন্দরবন বাদে দেশের কক্সবাজারসহ অন্যান্য স্পটগুলো খুলে দিয়েছে সরকার। তাহলে শুধু সুন্দরবনের ওপর নিষেধাজ্ঞা কি কারনে এমন প্রশ্ন ভ্রমন পিপাষুদের।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের আহবায়ক মঈনুল ইসলাম জমাদ্দার বলেন,নয়নাভিরাম সুন্দরবন দেখার জন্য দেশি-বিদেশি পর্যটকরা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। দীর্ঘ ৬ মাস সুন্দরবনে পর্যটকদের যাতায়াত ও নৌ-যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরকার পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রায় সবকিছু খুলে দিলেও সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। অথচ সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পে হাজার হাজার মানুষের আয় জড়িত।
ট্যুর ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জানান, গত ৬ মাসে প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ব্যবসায়ীদের। পর্যটন খাতে এ অঞ্চলের প্রায় ২০ হাজার পরিবার জড়িত। সুন্দরবন কেন্দ্রিক অন্তত ৭০টি ট্যুর কোম্পানি ব্যবসার সাথে জড়িত। বর্তমানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসিয়ে বেতন দিতে হচ্ছে। এবছর চালু না হলে ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়বে বলে দাবি করেন তিনি।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, করোনার কারনে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষধাজ্ঞা জারি করা হয়। বনবিভাগ ইচ্ছে করলেই এটা চালু করতে পারে না। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির অনুমোদন না হলে এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।