হোম অন্যান্যশিক্ষা স্কুলের ছুটিতে শুভঙ্করের ফাঁকি, ক্লাস করতে হবে অর্ধেক রমজান পর্যন্ত

স্কুলের ছুটিতে শুভঙ্করের ফাঁকি, ক্লাস করতে হবে অর্ধেক রমজান পর্যন্ত

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 62 ভিউজ

নিউজ ডেস্ক:
২০২৬ সালের সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ছুটিতে শুভঙ্করের ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষক-অভিভাবকরা। একইসঙ্গে আসন্ন রোজায় গত বছরের তুলনায় এবার ১৭ থেকে ১৮ দিন ছুটি কমানো হয়েছে। রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সরকারি মাধ্যমিক-১ শাখা থেকে ছুটির তালিকা প্রকাশ করা হয়। তালিকা বিশ্লেষণে এসব তথ্য সামনে এসেছে।

ছুটির তালিকা ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০২৬ সালে স্কুলে মোট ছুটি দেওয়া হয়েছে ৬৪ দিন। তবে এই ছুটি গণনা করা হয়েছে সাপ্তাহিক বন্ধসহ। অর্থাৎ শুক্র এবং শনিবারের ছুটি মিলিয়ে এবার ৬৪ দিন স্কুল বন্ধ থাকবে। ২০২৫ সালে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন ব্যতীত স্কুলে মোট ৭৬ দিন ছুটি ছিল। ২০২৫ সালে শুক্র ও শনিবার মিলিয়ে মোট ছুটি ছিল ১০১ দিন। এবার সেই সংখ্যা ৬৪ দিনে নেমেছে।

তালিকা অনুযায়ী, ২০২৬ সালে সবচেয়ে বড় ছুটি আগামী ৮ থেকে ২৬ মার্চ তথা ১৯ দিনের। এসব ছুটি রমজান, ঈদ ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালে শুক্র এবং শনিবার ছাড়াই রমজান মাসে ২৮ দিন ছুটি ছিল। তবে এবার রমজানের ছুটি দেওয়া হয়েছে শুক্র এবং শনিবার হিসেব করে।

ছুটির তালিকায় ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি থাকবে টানা ১২ দিন। এ ছুটি ২৪ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত চলবে। এর মধ্যে সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে। গত বছর এই ছুটি ছিল ১৫ দিন।

দুর্গাপূজায় এবার ৫ দিন ছুটি রাখা হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্মী পূজা, প্রবারণা পূর্ণিমা, ফাতেহা-ই-ইয়াজ দহমসহ বেশ কয়েকটি ছুটি আছে। এবার স্কুলের সবগুলো বড় বড় ছুটি গণনা করা হয়েছে শুক্র ও শনিবার হিসেব করে। ২০২৫ সালে এই ছুটিগুলো শুক্র এবং শনিবার ছাড়াই গণনা করা হয়েছে। বড় ছুটিগুলো ক্ষেত্রে এবার শুক্র ও শনিবারের ছুটি হিসেব করে ছুটি গণনা করা হয়েছে।

অর্ধেক রমজান পর্যন্ত ক্লাস, শিক্ষক-অভিভাবকদের ক্ষোভ
এদিকে আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে অর্ধেকের বেশি রমজান পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত শ্রেণিকক্ষভিত্তিক পাঠদান চালু রাখার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। তাদের মতে, রোজা রেখে দীর্ঘ সময় শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পাঠগ্রহণ করা শারীরিক ও মানসিকভাবে কষ্টসাধ্য। বিশেষ করে গরমের মৌসুমে রোজা পালন করে টানা ক্লাস নেওয়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করবে।

শিক্ষকরা বলছেন, রমজান মাস আত্মসংযম ও ইবাদতের সময়। এ সময়ে পূর্ণমাত্রায় ক্লাস কার্যক্রম পরিচালনা করা বাস্তবসম্মত নয়। অনেক শিক্ষার্থী দুর্বলতা, ক্লান্তি ও পানিশূন্যতায় ভোগে, যা তাদের মনোযোগ ও শেখার সক্ষমতাকে ব্যাহত করে। একইভাবে শিক্ষকরা রোজা রেখে পাঠদান দিতে গিয়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কার কথাও তুলে ধরছেন।

অভিভাবকদের অভিযোগ, মুসলিম অধ্যুষিত দেশে রমজানের মতো গুরুত্বপূর্ণ মাসে শিক্ষা কার্যক্রমের সময়সূচি নির্ধারণে আরও সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন ছিল। তারা মনে করছেন, সীমিত সময়ের ক্লাস, কিংবা রমজানের শুরু থেকেই ছুটি বা বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্বস্তি দেওয়া যেত। বর্তমান সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের সুস্থতা ও ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করছে না বলেও তারা মন্তব্য করেছেন।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে ঢাকার একটি বেসরকারি স্কুলের গণিতের সহকারী শিক্ষক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, রমজান মাসে গরমের মধ্যে রোজা রেখে ক্লাস করানো কঠিন। শিক্ষার্থীদের মধ্যেও অনেকে রোজা থাকবেন, তারা শ্রেণিকক্ষে এসে অসুস্থ হয়ে গেলে এর দায় কে নেবে? রোজার ছুটি শুক্র ও শনিবারসহ গণনা করায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।’

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দিবা শাখার ৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাব মোমেন আলী বলেন, ‘রোজা রেখে সকালে মেয়েকে স্কুলে দিয়ে আসা কঠিন হবে। আমার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণি থেকে রোজা রাখে। ওর জন্য রোজা রেখে ক্লাস করা কঠিন। মেয়ে অসুস্থ হলে সরকার তো এর দায় নেবে না। ছুটির তালিকা সংশোধনের দাবি জানান এ অভিভাবক।

এ বিষয়ে জানতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সরকারি মাধ্যমিক) সাইদুর রহমানকে কল করা হলে তিনি কল রিসিভ করে কেটে দেন। পরে উপসচিব সাবিনা ইয়াসমিনকে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।”সুন্দর ভাবে শিরোনাম লিখে দাও”

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন