নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরায় জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে শহরের খুলনা রোড মোড়ের আসিফ চত্বরে এ বিক্ষোভ হয়। তবে, পুলিশের দাবি অগ্নিকান্ডের কোন ঘটনা ঘটেনি।
বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় তারা বলেন, “একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’, ‘জুলাই স্মৃতি স্তম্ভে আগুন কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’। এ ধরনের শ্লোগানে শ্লোগানে পুরো এলাকায় মুখরিত হয়ে ওঠে।
বিক্ষোভে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরা শাখার আহবায়ক আরাফাত হোসাইন, সদস্য নাজমুল হক রনি, মুজাহিদুল ইসলামসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাত নয়টার দিকে শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে কে বা কারা পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়। ঘটনার পর থেকেই একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক আগুন জ্বালানোর সময় যুবলীগ ও শেখ হাসিনার নামে শ্লোগান দিচ্ছেন। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। স্থানীয়দের দাবি, দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরা শাখার আহŸায়ক আরাফাত হোসাইন জানান, জুলাই স্মৃতি স্তম্ভে জুলাই যোদ্ধাদের বিপ্লবী শ্লোগান রয়েছে। সাতক্ষীরার চার শহীদের নাম রয়েছে। অথচ সেখানে আগুনে দেয়া হয়েছে, সেখানে প্রশাসনের কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিলনা। সিসি টিভির ক্যামেরার ফুটেজ এখনও উদ্ধার হয়নি। সব মিলিয়ে আমরা যেন প্রশাসনের একটি ঢিলেঢালা অবস্থা দেখতে পাচ্ছি। এছাড়া সাতক্ষীরা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের পরিচয়ে প্রায় প্রতিদিন পোষ্টারিং ও মিছিল করা হচ্ছে। আমরা চাই যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একই সাথে যারা তাদেরকে আর্থিক সহযোগিতা করছে তাদেরও আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত ছাত্র-জনতা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন মাঠে অবস্থান করবে। আমাদের একটাই দাবী প্রশাসন যেন এই ফ্যাসিবাদ গোষ্ঠিকে প্রশ্রয় না দেয় এবং প্রশাসনের সর্বোচ্চ টহল জোরদার থাকে। যারা স্মৃতি স্তম্ভে আগুন দিয়েছে তাদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে আরো জানান তিনি।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনার পর পরই মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে আমি ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু অগ্নিসংযোগের কোন নমুনা পাওয়া যাইনি। তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলের ১৫/২০ হাত দুরে জেলা পরিষদের সিসি ক্যামেরা ও হ্যালোজেন লাইট স্থাপন করা রয়েছে। বিষয়টি সার্বিকভাবে ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে আহবান জানান পুলিশ সুপার।
