হোম Uncategorized নিষ্কাশন নালা বন্ধ করে দেওয়ায় পানির নিচে কবরস্থান

নিষ্কাশন নালা বন্ধ করে দেওয়ায় পানির নিচে কবরস্থান

কর্তৃক
০ মন্তব্য 137 ভিউজ
তাজমুল হোসেন:
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের নায়ড়া গ্রামে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন বন্ধ করে দেওয়ায় কবরস্থান ও রাস্তায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রামের পাঁচ  শতাধিক পরিবার। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
নায়ড়া গ্রামের সাহাবাজ পাড়ার কামরুল, আলফাজ, রাজ্জাক, লিয়াকত’সহ গ্রামবাসী জানায়, গ্রামে ছয় শতাধিক পরিবারের বাস। তা ছাড়া ওই রাস্তা দিয়ে আশপাশের গ্রামের হাজার হাজার লোকসহ বাঁকড়া-বাগআঁচড়া সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে নায়ড়ার বঙ্গবন্ধু সড়ক বিকল্প হিসেবে ব্যাবহার করে আসছে, যার ফলে রাস্তায় এখন হাজার হাজার যানবাহন ও মানুষের চলাচল । ওই গ্রামের মৃত তাজালি দফাদারের ছেলে তালেব সাত-আট মাস আগে তাঁর জমির সামনে রাস্তার পাশে মহল্লা ও কবরস্থানের পানি নিষ্কাশনের নালাটি হঠাৎ করে মাটি ভরাট করে বন্ধ করে দেন।
এতে অল্প বৃষ্টিতেই কবরস্থানসহ, কয়েকটি পুকুর, দোকানের চারপাশ পানির নিচে তলিয়ে যায়। এছাড়াও দুটি মার্কেটের সামনেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। পানি অপসারণের নালা বন্ধ করে দেওয়ায় অধিক জলাবদ্ধতায় রাস্তা ভেসে উপর দিয়ে পানি গিয়ে কয়েকজনের বসতভিটাও ভেসে যেতে দেখা যায়। এমতাবস্থায় রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এমনকি রাস্তার উপর দিয়ে যে ৩০ ফুট জায়গায় দিয়ে পানি অপসারণ হচ্ছে, রাস্তা সেখান থেকে ভাঙনের আশংকায় রয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে গ্রামবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। যেকোনো সময় আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তারা।
তাজালি দফাদারের ছেলে তালেব বলেন, কালভার্টের সোজা কোন ড্রেন বন্ধ করা হয়নি।
সর্দার পাড়ার সামাদ সর্দার বলেন, কিছুদিন আগে পানি বের হওয়ার নালাটা বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে একটু বৃষ্টি হলেই আমাদের কবরস্থান পানির নিচে তলিয়ে যায়। আমরা ড্রেন কাটতে গেলে তারা ড্রেন কাটতে দিচ্ছে না। কবরস্থানে কিছু মাটি ফেলে উঁচু করা দরকার।  রাস্তারপাশে কবরস্থান তাই একটা পাকা প্রাচীরও দেওয়া দরকার। কিন্তু কবরস্থান বেশীরভাগ গরীব মানুষের, তাদের অর্থনৈতীক অবস্থাভালো না। তাই তারা মাটি ফেলে উঁচু করে একটা প্রাচীর ও দিতে পারছে না।
উপজেলা বা সরকারি ভাবে যদি কোনো বাজেট দিতো তাহলে আমরা একটু মরে গিয়েও শান্তিতে থাকতাম। তিনি জানান, এখুনি যদি আমাদের কেউ মারা যায় তাহলে তাকে পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ কবরস্থানে এতো পানি যে কবর খোড়ার সময় পানি ছেঁচে পারা যাবে না। একমাত্র উপায় কবরের ভেতর কলাগাছ দিয়ে পানিতে ভাসিয়ে দিতে হবে। যাতে শেষ বয়সে মরে একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারেন সেজন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিও তিনি আকর্ষণ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক  ফয়জুর রহমান বলেন, সরকারি রাস্তায় সরকারি কালভার্টের ড্রেন বন্ধ করার এখতিয়ার কারো নেই।  তার পরও কয়েক মাস আগে নায়ড়া তেঁতুলতলা সংলগ্ন রাস্তার কালভার্টের ড্রেন মাটি ভরাট করে বন্ধ করে দিলে তারপর থেকে একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে । এসময় পানি অপসারণের জায়গা না পেয়ে রাস্তার উপর দিয়ে ভেসে কয়েকটি বসতভিটাতেও পানি প্রবেশ করছে,। তিনি আরো বলেন, নায়ড়া মোড়ল পাড়া মোড় সংলগ্ন সোহাবিন মুরব্বির বাড়ির সামনে একই রকম পানি অপসারণ না হতে পেরে রাস্তায় সবসময় পানি জমে থাক।  যার ফলে এ দুই জায়গায় রাস্তা দ্রুত ভেঙে গিয়ে নষ্ট হওয়ার আশংকা কাজ করছে। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এ সমস্যার আশু সমাধান চাই।
শংকরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিসার উদ্দীন বলেন, আমি ৪ নং ওয়ার্ড  ইউপি  সদস্য হাসমত আলীকে বলে বিষয়টি দ্রুত সমাধান করে জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যাবস্থা করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন