হোম আন্তর্জাতিক বিক্ষোভে চার জন নিহত হওয়ার পর লাদাখে কারফিউ জারি

বিক্ষোভে চার জন নিহত হওয়ার পর লাদাখে কারফিউ জারি

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 67 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

লাদাখে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ছাত্রসহ চার জন নিহত হওয়ার পর অঞ্চলের রাজধানী লেহ এবং কারগিল জেলায় কারফিউ জারি করেছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবারের অস্থিরতায় পুলিশের গাড়ি পোড়ানোর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একটি অফিসে আগুন লাগানো হয়েছে।

ভারত সরকার বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেওয়া সোনম ওয়াংচুককে ‘সহিংসতা উস্কে দেওয়ার জন্য’ দোষারোপ করেছে। তবে তিনি এই দাবি অস্বীকার করেছেন।

মুসলিম ও বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর পাহাড়ি মরুভূমি লাদাখ ২০১৯ সালে আধা-স্বায়ত্তশাসন হারায়। বিজেপি সরকার এটিকে প্রাক্তন ভারত-শাসিত জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য থেকে আলাদা করে উভয় অঞ্চলের ওপর সরাসরি শাসন আরোপ করে।

লাদাখের জনসংখ্যা প্রায় ৩ লাখ এবং এটি চীন ও পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী হওয়ায় নয়াদিল্লির জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। লেহ অঞ্চল – যেখানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে, শহরটি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অধ্যুষিত। তারা কয়েক দশক ধরে তাদের জনগণের জন্য একটি পৃথক রাজ্যের দাবি করে আসছে। এদিকে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কার্গিল জেলা ঐতিহাসিকভাবে ভারত-শাসিত কাশ্মীরের সঙ্গে একীভূত হতে চেয়েছিল।

কিন্তু ২০১৯ সাল থেকে উভয় সম্প্রদায় লাদাখের রাজ্যত্ব পুনরুদ্ধারের দাবিতে একত্রিত হয়েছে। পাশাপাশি বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানিয়ে আসছে, যা তাদের চাকরি এবং জমির নিয়ন্ত্রণ দেবে।

বুধবার বিক্ষোভের পর গভীর রাতে এক বিবৃতিতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অস্থিরতার জন্য ওয়াংচুককে দায়ী করেছে। তিনি অনশনরত ছিলেন।

বিবৃতি বলা হয়েছে, ‘তিনি অনশন চালিয়ে গেছেন এবং আরব বসন্তের মতো বিক্ষোভের উস্কানিমূলক উল্লেখ ও নেপালের জেন-জি বিক্ষোভের উল্লেখ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করেন।’

এতে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা বিজেপির স্থানীয় অফিসে আক্রমণ করেছে, ভবনে আগুন দিয়েছে এবং একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন দিয়েছে। এর ফলে কমপক্ষে ৩০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।

স্থানীয় সংবাদ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুসারে, পুলিশ গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে, যার ফলে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী আহত হয়। চার জন গুরুতর আহত হন এবং পরে মারা যান।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আত্মরক্ষার জন্য পুলিশকে গুলি চালাতে হয়েছিল, যার ফলে দুর্ভাগ্যবশত কিছু হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।’

প্রভাবশালী ধর্মীয় সংগঠন লাদাখ বৌদ্ধ সমিতির প্রধান ছেড়িং দর্জে লাকরুক বলেন, লাদাখের তরুণরা সহিংসতার বিরুদ্ধে। কিন্তু তারা গভীরভাবে হতাশ, কারণ সরকার বারবার সংলাপ প্রক্রিয়া বিলম্বিত করছে এবং এই অঞ্চলে বেকারত্ব ক্রমশ বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, জনগণ অনশন ধর্মঘটে থাকা সত্ত্বেও পরবর্তী দফার আলোচনার জন্য একটি দূরবর্তী তারিখ নির্ধারণের সরকারের সিদ্ধান্ত জনগণকে বিশেষভাবে ক্ষুব্ধ করেছে।

প্রসঙ্গত, ভারত লাদাখে বিশাল সেনা মোতায়েন রেখেছে। ২০২০ সালে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় এক সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন ভারতীয় এবং চার জন চীনা সৈন্য নিহত হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন