আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানের রাজধানী তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগার জাহাঙ্গীর। তিনি রোববার (২৯ জুন) গণমাধ্যমকে জানান, গত ২৩ জুন সংঘটিত ওই হামলায় প্রাণ হারানোদের মধ্যে ছিলেন কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সামরিক প্রশিক্ষণরত তরুণ, বন্দি, দর্শনার্থী এবং আশপাশে বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দারা
আসগার জাহাঙ্গীর বলেন, ‘হামলার সময় অনেক বন্দির স্বজনেরা সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন। এদের অনেকে হতাহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যাও কম নয়।’ তিনি জানান, কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের একটি অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং আহত বন্দিদের চিকিৎসার পর অন্য কারাগারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলা ছিল কেবল একটি সামরিক পদক্ষেপ নয়—বরং একটি কৌশলগত বার্তা। তারা বলছেন, এর মাধ্যমে ইসরায়েল স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা শুধু পরমাণু স্থাপনা নয়, ইরানি রাজনৈতিক বা বিচার কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকগুলোকেও টার্গেট করতে প্রস্তুত।
হামলার সময় এভিন কারাগারে বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিমধ্কযও বন্দি ছিলেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ফ্রান্সের দুই নাগরিক সেসিল কোলার ও জ্যাক প্যারিস, যারা প্রায় তিন বছর ধরে ওই কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
ঘটনার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো। এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে দেওয়া বার্তায় তিনি বলেন, ‘তেহরানে এভিন কারাগারে হামলায় আমাদের নাগরিকরা সরাসরি বিপদের মুখে পড়েছেন। এটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।’
এ হামলার ঘটনায় এখনো ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রায়টার্স সূত্রে পাওয়া খবরে বলা হয়েছে, এটি একটি সুপরিকল্পিত হামলা ছিল, যার পেছনে রয়েছে বড় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।
হামলার ধাক্কায় তেহরানজুড়ে উত্তেজনা বাড়ছে এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতিও কঠোর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক সংঘাত আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল।