হোম জাতীয় রাখাইনে মানবিক করিডরের বিষয়ে জাতিসংঘ জড়িত নয়: গোয়েন লুইস

রাখাইনে মানবিক করিডরের বিষয়ে জাতিসংঘ জড়িত নয়: গোয়েন লুইস

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 55 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:

বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে রাখাইনে মানবিক সহায়তার জন্য করিডর প্রতিষ্ঠায় কাজ করছিল (বাংলাদেশ) সরকার। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জাতিসংঘ জড়িত নয় বলে জানিয়েছে সংস্থাটির আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস।

বুধবার (৪ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টকে’ তিনি একথা বলেন।

গোয়েন লুইস বলেন, ‘যেকোনও ধরনের আন্তঃসীমান্ত সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ, সংঘাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের সহায়তা করার জন্য যেকোনও ধরনের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। এ বিষয়ে জাতিসংঘ সহায়তা করবে। কিন্তু এ ধরনের কোনও মানবিক করিডর নেই। আমরা করিডর সংক্রান্ত কোনও ধরনের আলোচনায়ও নেই।’

মানবিক করিডর একটি আনুষ্ঠানিক ও আইনি বিষয়। এক্ষেত্রে দুটি সার্বভৌম দেশ— বাংলাদেশ সরকার এবং মিয়ানমার সরকার এবং প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট অন্য পক্ষদের আনুষ্ঠানিক সম্মতি থাকতে হবে। যদি এখানে কোনও চুক্তি হয়, তবে জাতিসংঘ সহায়তা করতে পারে। আমি যতদূর বুঝতে পারছি— এই ধরনের চুক্তি এখনও পর্যন্ত হয়নি বলে তিনি জানান।

এটি (করিডর) দুই সরকারের বিষয়। এটি প্রতিষ্ঠা হলে জাতিসংঘ সহায়তা করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাখাইনে প্রবেশ করা খুব দুরূহ। সেখানে সংঘাত চলছে এবং পরিস্থিতি অনিশ্চিত। মিযানমার সরকারের সঙ্গে ইউএনডিপি এবং ইউএনএইচসিআরের মধ্যে সহায়তা দেওয়ার জন্য একটি সমঝোতা ছিল। এটি চালু রয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। যদিও সেখানে কিছু কর্মী রয়েছে এবং কিছু অংশীদার সেখানে কাজ করছে।’

‘রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল যোগাড় করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়ছে। রোহিঙ্গারা সম্মানজনকভাবে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে চায়।’ কিন্তু সেখানকার পরিস্থিতি এখন ভালো নয় এবং চ্যালেঞ্জিং বলে তিনি জানান।

বিতর্কিত প্রতিবেদন

মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা নিয়ে গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার একটি ভুল রিপোর্টের কড়া প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশ। ওই রিপোর্টে জানানো হয় যে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি (অং সান সুকির সরকারকে হটিয়ে সামরিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে) থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে ৭১ হাজার ৩০০ মানুষ বাস্তচ্যূত হয়ে দেশত্যাগ করেছে। কিন্তু তারা সবাই ভারতের মনিপুর ও মিজোরাম রাজ্যে প্রবেশ করেছে। অর্থাৎ জতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত তিন বছরে মিয়ানমার থেকে বাস্তচ্যূত হয়ে বাংলাদেশে কেউ প্রবেশ করেনি।

ওই প্রতিবেদন সংশোধন করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে গোয়েন লুইস

বলেন, ‘রাখাইনের পরিস্থিতি নিয়ে একটি ম্যাপ প্রকাশ করা হয়েছিল। সেখানে নতুন যে রোহিঙ্গারা এসেছিল, সেই সংখ্যাটি উল্লেখ করা হয়নি। কারণ বাংলাদেশ সরকার নতুন সংখ্যার বিষয়ে আমাদের গ্রিন সিগন্যাল দেয়নি। সেজন্য ম্যাপে এটি উল্লেখ করা হয়নি। এরপর বাংলাদেশ সরকার আমাকে নতুন সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বলেছে।’

জাতিসংঘের কাছে সবসময় আপডেট তথ্য থাকে না। আমরা যখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে এই তথ্য জানিয়েছি, তখন তারা ম্যাপটি আপডেট করেছে বলে তিনি জানান।

জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি বলেন, ‘ওই ম্যাপে সব তথ্য ছিল না বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্বেগ ছিল। কিন্তু জাতিসংঘ ওই তথ্য দেয়নি, কারণ এটি সরকারের অনুমোদন ছিল না। আমি বিশ্বাস করি না যে, এটি বিতর্ক। বরং আমি মনে করি, এটি কমিউনিকেশন ইস্যু এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্ক রয়েছে।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন