হোম অন্যান্যসারাদেশ পানির নীচে খুলনার ৪০ গ্রামের মানুষ

পানির নীচে খুলনার ৪০ গ্রামের মানুষ

কর্তৃক
০ মন্তব্য 86 ভিউজ

খুলনা অফিস :
খুলনার নদ নদীতে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে বাড়ছে নতুন নতুন এলাকা ভাঙনের আশঙ্কা। এদিকে প্রায় তিন মাস পার হতে চললেও কয়রার ভাঙন কবলিত এলাকায় এখনও বাঁধ দেওয়া সম্ভব হয়নি। পানির নিচে প্রায় ৪০ গ্রামের মানুষ।

ভোগান্তির পাশাপাশি নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে মানুষের মনে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র সূত্র জানিয়েছে, দাকোপে পশুর নদীতে স্বাভাবিক পানি প্রবাহের মাত্রা দুই দশমিক ৪৪ মিটার। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’র সময়ে তা উঠেছিল তিন দশমিক ৩৭ মিটারে। আর গত কয়েক দিন ধরেই পানি প্রবাহের মাত্রা তিন দশমিক ৬৩ মিটার।

শ্রাবনের এই সময়ে খুলনা অঞ্চলের অধিকাংশ বড় নদীতে বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী আমাবশ্যার জোয়ারে পানির এমন চাপ আরও বাড়ার শঙ্কা স্থানীয়দের। ফলে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত বেঁড়ি বাঁধ আবারও ভেঙে বা উপচে নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পাউবো সূত্রটি আরও জানায়, খুলনার নদ-নদীগুলোর পানি প্রবাহের মাত্রা নির্ণয়ে দাকোপের পশুর নদীকে নির্ণয়ক হিসেবে ধরা হয়। পশুর নদীতে পানি প্রবাহের স্বাভাবিক মাত্রা দুই দশমিক ৪৪ মিটার। আম্পানের একদিন আগে ২০ মে তা বেড়ে হয়েছিল তিন দশমিক ৩৭। আর গত কয়েকদিন ধরেই প্রবাহের মাত্রা তিন দশমিক ৬৩মিটার। খুলনার সবচেয়ে বড় নদী শিবসার স্বাভাবিক পানি প্রবাহ থাকে দুই দশমিক ৫৯। সেখানেও প্রবাহিত হয়েছে সাড়ে তিন মিটারের উপরে।

এ অবস্থার মধ্য দিয়ে কয়রার বেড়ি বাঁধে আবারও ভাঙন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যেসব জায়গায় ভাঙন ছিল না সেগুলোতেও আবার নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা’র নির্বাহী প্রকৌশলী-২ পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, ‘পশুর নদীতে বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে; তিন দশমিক ৬৩মিটার। যার স্বাভাবিক দুই দশমিক ৪৪ মিটার’।

তিনি আরও বলেন, ‘আম্পানের পর বড় কোন প্রকল্পের কাজ হয়নি। তবে সংস্কার করেছি বিধ্বস্ত বেড়ি বাঁধ। আম্পানের পর দাকোপের ১২/৪৪নং পোল্ডারের প্রকল্প ঢাকায় প্রেরণ করেছি। আশা করছি, এটা অনুমোদন হয়ে যাবে। কয়রা উপজেলা বাদে অন্যান্য উপজেলার বেড়ি বাঁধ অতোটা নাজুক নয়। জলোচ্ছ¡াস না হলে বাঁধের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম’।

কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, পানিতে সদর ইউনিয়নের ৮০ ভাগ তলিয়ে গেছে। এখনও পানি বন্দি হাজার হাজার মানুষ। রিং বাঁধে দিয়ে নদীর পানি ঠেকিয়ে রাখা হলেও তা রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে আসছে জোয়ারে আবারও ভেঙে যাবে। তখন আর দুর্ভোগের সীমা থাকবে না’। উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম কোম্পানি বলেন, ‘নোনা পানিতে পুরো ইউনিয়ন তলিয়ে রয়েছে। অবিলম্বে বাঁধ মেরামত কার্যক্রম চালু করা জরুরি। এ ইউনিয়নের ভেঙে যাওয়া এলাকাগুলোতে রিং বাঁধ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না’।

পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরা এস্টিমেট পাঠিয়েছি। বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু করব। নদীতে জোয়ারের পানির চাপ বেশি থাকায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। কয়েকবার চেষ্টা করেও বাঁধ ঠেকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়েছি। এখন অপেক্ষা ছাড়া আর কোন উপায় নেই’।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন