নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার সাবেক স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সোহেল আহমেদ মানিকের নেতৃত্বে সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ব্যাপক ভাংচুর ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার (৩ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পরিদর্শনে আসা এক চিকিৎসকসহ ৬ জন নার্স ও কর্মচারী আহত হয়েছে। এদিকে, সকালে এঘটনার পর বিকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব এড. রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে সাবেক স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা সোহেল আহমেদ মানিককে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাই, দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় আহত শাহিনুর নামের এক রোগী সকালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে ইনডোরে ভর্তি হন। সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে না পেয়ে রোগীর স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে তারা ফের জরুরি বিভাগে ফিরে এসে কর্তব্যরত স্টাফদের সঙ্গে তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমেদ মানিকের নেতৃত্বে স্টাফদের ওপর হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়।
হামলার সময় হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। রোগীর স্বজনদের হামলায় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আক্তারুল ইসলাম ও স্বাস্থ্যর মন্ত্রণালয় থেকে আসা সিনিয়র চিকিৎসক তানভীর আহমেদসহ ৬ জন হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারী আহত হয়েছে ।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ফয়সাল আহমেদ বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমেদ মানিকের নেতৃত্বে জরুরি বিভাগে হামলা চালানো হয়েছে। এতে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে জরুরি বিভাগে সেবা দেওয়ার মতো পরিবেশ নেই। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
তবে, সাবেক স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সোহেল আহমেদ মানিক তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে একজন মুমূর্ষু রুগীর স্বজনরা হামলা চালিয়েছে। আমি এ হামলার সাথে জড়িত নই।
এদিকে, সকালে সদর হাসপাতাল ভাংচুর ও স্টাফদের উপরে হামলার ঘটনার পর বিকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এড, রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত একটি পত্রের মাধ্যমে সোহেল আহমেদ মানিককে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত সেচ্ছাসেবক দলের নেতা মানিকের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অপ্রীতিকর কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে দলটি।
বহিষ্কার পত্রে জানানো হয়, সাতক্ষীরা জেলার একজন দায়িত্বশীল নেতা হয়েও আপনি দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি ও একজন স্কুল শিক্ষকের সাথে অসাধাচরণসহ নানা সংঘাতমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকার সুষ্পষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে আপনাকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে নির্দেশক্রমে বহিস্কার করা হলো।